সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
বাংলাদেশকে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক ভারতকে পেছনে ফেলে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দামি দল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমের খেলা নিয়ে যা জানাল বিসিবি কয়েক দশকের অনিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে সাদপন্থি মুখপাত্র মুয়াজ বিন নূর ৩ দিনের রিমান্ডে লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচার, মা-ছেলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু এনআইডির তথ্য বেহাত, বিসিসির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপ নিয়ে গেল ভারত হামজায় দেশের ফুটবলের সুদিন ফিরবে, আশা ক্রীড়া উপদেষ্টার দেশের মানুষ জামায়াতকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বরণ করতে প্রস্তুত

হাদিসে বর্ণনায় শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষার আমল

  • সময়: সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২.৪৫ পিএম
  • ১৮৪ জন

দুটি জিনিস মানুষকে সর্বদা খারাপ কাজের আদেশ করতে থাকে। এক. শয়তান । দুই. নফস বা মন। তারা বিভিন্ন উপায়ে নানা ফন্দিতে মানুষের ভেতরে খারাপ কাজ করার প্ররোচনা দিতে থাকে।
সর্বদা মন্দ কাজেরই উসকানি দেয়। প্রিয় নবীজি (সা.) আমাদের এ থেকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, ‘আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
সে তো তোমাদের অন্যায় ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্পর্কে এমন কথা বলতেই আদেশ করে, যা তোমরা জান না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৮, ১৬৯)
আমরা অনেক সময় খুব সহজেই শয়তানের ধোঁকায় নিপতিত হই। এ জন্য প্রিয় নবী (সা.) এদের থেকে আশ্রয় প্রার্থনার আদেশ দিয়েছেন। নিচে শয়তান থেকে আশ্রয় লাভের কিছু বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো—
১. কোরআন পড়ার সময়
তিলাওয়াত করার আগে আউজুবিল্লাহ পড়া সুন্নত।
তিলাওয়াতের সময় শয়তান যেন আমার ভেতর প্ররোচনা দিতে না পারে, কোরআনের অর্থ বোঝার সময় সে যেন ভুলভাল বোঝাতে না পারে তার জন্য শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা। কারণ শয়তান মানুষের চিন্তার মাঝে বিভ্রান্তির অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। আমরা যদি আউজুবিল্লাহ পড়ে তিলাওয়াত শুরু করি তাহলে শয়তান তার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। বান্দা যখন ইখলাসের সঙ্গে আউজুবিল্লাহ পাঠ করবে তখন কোরআনের প্রকৃত হিদায়াত লাভ করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সুতরাং যখন কোরআন পড়বে, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করবে।
’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
২. নামাজের ভেতর
শয়তানের বিশেষ একটি বাহিনী আছে। তারা খুব চৌকস। এদের প্রধানতম দায়িত্ব হচ্ছে মুসল্লিকে যেকোনো উপায়ে বিভ্রান্ত করা। মুসল্লি যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সব কিছুর মাঝেই এক ধরনের গোলমাল বাধিয়ে দেয়। নামাজের ভেতর যখন এমনটা অনুভব হবে তখন শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার কথা এসেছে। ওসমান ইবনে আবুল আস (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! শয়তান আমার এবং আমার নামাজ ও কিরাতের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে এলোমেলো করে দেয়। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ওটা এক (প্রকারের) শয়তান, যার নাম ‘খিনজিব’। যখন তুমি তার উপস্থিতি অনুভব করবে তখন (আউজুবিল্লাহ পড়ে) তার কবল থেকে আল্লাহর নামে আশ্রয় নিয়ে তিনবার তোমার বাঁ দিকে থুতু নিক্ষেপ করবে। তিনি বলেন, পরে আমি তা করলে আল্লাহ আমার থেকে তা দূর করে দিলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৫৫০)
৩. ঈমানে বিভ্রান্তির সময়
মুমিনের বিশ্বাসে তার ঈমানের মাঝে শয়তান কুমন্ত্রণা দেওয়ার চেষ্টা করে। নবীজি (সা.) সেই সময় ও শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কারো কাছে শয়তান আসতে পারে এবং সে বলতে পারে, এ বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? ওই বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? এরূপ প্রশ্ন করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে বসবে, তোমাদের প্রতিপালককে কে সৃষ্টি করেছে? যখন ব্যাপারটি এই স্তরে পৌঁছে যাবে, তখন সে যেন অবশ্যই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং বিরত হয়ে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৭৬)
৪. রাগের সময়
ক্রোধ রাগ এগুলো শয়তান থেকে আসে। শয়তান মানুষকে সহজেই ক্রোধান্বিত করে তোলে। এ জন্য রাগের সময় শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে। সুলাইমান ইবনে সুরাদ (রা.) বলেন, দুজন ব্যক্তি নবী (সা.)-এর সামনে একে অন্যকে গালি দিচ্ছিল। তাদের একজন এত ক্রুদ্ধ হয়েছিল যে তার চেহারা ফুলে বিগড়ে গিয়েছিল। তখন নবী (সা.) বললেন, আমি অবশ্যই একটিই কালিমা জানি। যদি সে ওই কালিমা পড়ত, তাহলে তার ক্রোধ চলে যেত। তখন এক ব্যক্তি তার কাছে গিয়ে নবী (সা.)-এর ওই কথাটি তাকে জানাল। আর বলল, তুমি শয়তান থেকে পানাহ চাও। তখন সে বলল, আমার মধ্যে কি কোনো রোগ দেখা যাচ্ছে? আমি কি পাগল? তুমি চলে যাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০৪৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস, ৬৪০৯, জামে তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫২)
৫. মন্দ স্বপ্ন দেখলে
ঘুমের ভেতর যদি খারাপ স্বপ্ন দেখি অথবা স্বপ্ন দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে যাই, তখন সুন্নাহ হচ্ছে শয়তান থেকে সঙ্গে সঙ্গে আশ্রয় প্রার্থনা করা। আবু কাতাদা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, সৎ ও ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। অতএব, তোমাদের কেউ যখন ভীতিকর মন্দ স্বপ্ন দেখে তখন সে যেন তার বাঁ দিকে থুতু নিক্ষেপ করে আর শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। তাহলে এরূপ স্বপ্ন তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৯২; সহিহ মুসলিম, হাদিস ৫৭০৬)
৬. শৌচাগারে প্রবেশের সময়
আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) যখন টয়লেটে প্রবেশ করতেন, তখন তিনি বলতেন, (অর্থ) হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও স্ত্রী জাতীয় শয়তানের থেকে পানাহ চাচ্ছি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩২২; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৭৫)
৭. ছোট বাচ্চার জন্য
শিশু বাচ্চার জন্য শয়তান থেকে নবীজি (সা.) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে পানাহ চাইতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ.) ইসমাঈল ও ইসহাক (আ.)-এর জন্য দোয়া পড়ে আশ্রয় চাইতেন। (দোয়াটির অর্থ হলো) আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে পানাহ চাচ্ছি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৭১)

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

One thought on "হাদিসে বর্ণনায় শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষার আমল"

  1. আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের says:

    আল্লাহ সুবাহানা তা’য়ালা আমাদের হেফাজত করুন…আমীন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com