মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

মংডু দখল, বাংলাদেশ সীমান্তের ‘নিয়ন্ত্রণ’ আরাকান আর্মির হাতে

  • সময়: মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১.৩৯ এএম
  • ৯৭ জন

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ের পর রোববার সকালে মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি।

সোমবার মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মি দাবি করেছে, রোববার সকালে জান্তার সীমান্ত এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। মংডু শহরের বাইরে তারা অবস্থান করছিল। তারা দাবি করে, তারা জান্তা বাহিনীর পাশাপাশি তাদের মিত্র আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির রোহিঙ্গা মিলিশিয়া, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়েছে।

রাখাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডুতে লড়াইয়ের পর সোমবার আরকান আর্মি মিলিটারি অপারেশন কমান্ড ১৫–এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেফতার করে। এর বাইরে ৮০ রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও জান্তা সেনাকে গ্রেফতার করেছে আরাকান আর্মি।

গত মে মাসের শেষ দিক থেকে মংডুতে হামলা শুরু করে আরাকান আর্মি। মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ পেতে তাদের ছয় মাস সময় লেগেছে। আরাকান আর্মির দাবি, বাংলাদেশ সীমান্তের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু, রাখাইনের বুথিডং ও শিন এলাকার পালেতাওয়ার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।

রাখাইনে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনঃস্থাপন করলে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে বসবাসকারী মানুষের দুর্দশা কমবে।

গত মাসে জাতিসংঘ জানায়, রাখাইনে ২০ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।

জান্তার পক্ষ থেকে এসব রাজ্যে যাওয়ার জন্য সড়কপথ ও নৌপথ অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাসহ খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সেখানে যেতে পারছে না।

সামরিক ওই বিশ্লেষক বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর সঙ্গে অর্থপূর্ণ সংলাপ করতে হবে।

আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে। ইতোমধ্যে আন শহরে ৩০টি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে আরাকান আর্মি। অন্য শহরগুলোতেও এগিয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠী।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকার আর্মি। ইতোমধ্যে এ গোষ্ঠী গত বছরের অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে উত্তরের শান রাজ্যের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর মধ্যে আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গয়া, তাউনগুপ এবং আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছে বলেও জানিয়েছে ইরাবতী।

আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাফ নদে আরাকান জলসীমায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ যাতে নাফ নদ অতিক্রম করতে না পারে সেজন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com