সারা দেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শ্লোগান ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’। এ শ্লোগানটির উদ্দেশ্য কী ছিল? এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা। সচিবালয়ের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সামনে ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলে স্লোগান দেন। নাহিদ ইসলাম ও অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে এ স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
জানা গেছে, ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ স্লোগানটি মূলত দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই উপদেষ্টা নাহিদ কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইঙ্গিত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি রাকিব হাসান।
মূলত, দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারের বদলে সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ হস্তান্তরের দাবিতে শ্লোগানটি দেওয়া হয়েছিল।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাকিব হাসান বলেন ‘স্লোগানটি ছিল মূলত ফ্যাসিবাদ আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে। বিগত ছয় বছরে তারা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জমি অধিগ্রহণ করতে পারেনি। প্রকল্পের মেয়েদ চারবার বৃদ্ধি করেও কাজ শেষ করতে পারেনি বরং তারা নিজেদের পকেট ভারিসহ রীতিমতো পুকুর চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। যা কোনোভাবেই উপদেষ্টা নাহিদকে কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইঙ্গিত করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হলো, সাবেক স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা এটা নিয়ে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনারা ঐক্যর ফাটল ধরাতে পারবেন না। আমরা দেশের স্বার্থে স্বৈরাচার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবো।’
এ সময় আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, ‘ফেসবুকের কিছু পেজে বিষয়টি ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে। মুলত স্বৈরাচারী কিছু দালালরাই এটিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল শিক্ষার্থী। তাদের কর্মসূচি ছিল শিক্ষাসচিবের কাছে পাঁচ দফা দাবি-সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া। কিন্তু শিক্ষাসচিব তাঁদের সঙ্গে দেখা না করায় সচিবালয়ের মূল ফটকের সামনে রাস্তার এক পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সচিবালয় থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল ভেতরে যায়। সেখানে শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষাসচিব ও উপদেষ্টা নাহিদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়।
বৈঠক শুরুর আগে তথ্য উপদেষ্টার সামনেই বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’। পরে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।