নিষিদ্ধ হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করে জুলাই গণহত্যায় জড়িত দলটিকে নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল বিবৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার কথা জানিয়েছে। সেই পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে টানা দুইদিন ধরে উত্তাল রয়েছে রাজধানী। জুলাই গণহত্যার দায়ে দলটির বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার কাছে ফোয়ারার সামনে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতা অংশ নেন। পরে একই দাবিতে ছাত্র-জনতা গতকাল বিকালে শাহবাগ ব্লকেড (অবরোধ) করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলছিল। সেখানে অবস্থান নেওয়া ছাত্র-জনতাকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, শেখ হাসিনার বিচারসহ নানা স্লোগানে প্রকম্পিত করতে দেখা গেছে।
এ কর্মসূচিতে ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থান’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে টানা অবস্থান নেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-জনতা। প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির স্বল্পসংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থানে যোগ দেন। ধীরে ধীরে উপস্থিতি বাড়তে থাকে। এতে যোগ দেন জুলাই ঐক্য, ইসলামী ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও ছাত্র পক্ষসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মধ্যরাতের পর মিছিল নিয়ে যমুনার সামনে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ ছাড়াও অবস্থান কর্মসূচিতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, লেবার পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠন সংহতি জানিয়েছে।
তবে একজন উপদেষ্টা যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধের কথা বললেও তা প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে যমুনার সামনে অবস্থান অব্যাহত রাখেন আন্দোলনকারীরা। রাতভর বিক্ষোভ চলার পর গতকাল সকালে তাদের সঙ্গে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে যমুনার সামনে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি বহাল থাকার কথা জানানোর পাশাপাশি হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বাদ জুমা যমুনার পশ্চিম পাশে ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েতের ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার সময় জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ ইসলামপন্থি কয়েকটি দলের নেতাকর্মীরা হাসনাত ও নাসীরুদ্দীনের সঙ্গে ছিলেন।
হাসনাতদের এ ঘোষণার পর সেখানে পাঁচটি পিকআপ ভ্যান একত্রিত করে মঞ্চও তৈরি করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে যমুনা ছেড়ে ফোয়ারার সামনের মঞ্চে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। বৈশাখের দুপুরের তপ্ত রোদের তীব্র গরম উপেক্ষা করে সেখানে ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। জমায়েত স্থলের রাস্তায় জুমার নামাজও আদায় করেন আন্দোলনকারীরা। জুমার নামাজের পর সেখানে উপস্থিতি বাড়তে থাকে। মিছিল সহকারে সেখানে দলে দলে যোগ দিতে শুরু করে জনতা। এনসিপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত ছাত্র মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন ও দলের নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের কয়েকজন সেখানে বক্তব্যও দেন। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মঞ্চ থেকে শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ সময় এনসিপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি সেদিন থেকে শুরু হবে, যেদিন থেকে টাইটেলটা হবে ‘বাংলাদেশ উইদাউট আওয়ামী লীগ (আওয়ামী লীগহীন বাংলাদেশ)’। আমাদের কথা অন্তর্বর্তী সরকারের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি। তাই এখন আমরা শাহবাগ ব্লকেড করব। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত আমরা শাহবাগে থাকব। এখান থেকে আমাদের দ্বিতীয় অভ্যুত্থান–পর্ব শুরু হবে।
শাহবাগের মোড় অবরোধ করে আওয়ামীবিরোধী এবং জুলাইয়ের নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে— ‘ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ’, ‘কণ্ঠে আবার লাগা জোর, আওয়ামী লীগের কবর খোঁড়’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ চাই, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’।
এ ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের গোল হয়ে বসে বৃত্ত তৈরি করে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এর মধ্যে ছাত্রশিবির মেট্রোরেল স্টেশন থেকে শাহবাগের দিকে, বারডেম হাসপাতালের সামনে হেফাজতে ইসলাম, এনসিপির নেতাকর্মীরা মোড়ের মধ্যস্থলে, জুলাই ঐক্য-ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা এক এক স্থানে বসে-দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এই অবস্থানে অন্যদের পাশাপাশি কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লক্ষণীয়।
নিষিদ্ধের দাবি সরকারের বিবেচনায়
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে গতকাল এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে এতে বলা হয়। ‘অন্তর্বর্তী সরকাররের বিবৃতি’ শিরোনামে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইতোমধ্যে সরকার জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে উল্লেখ করে আরো বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দলগুলো চাইলে দ্রুত আ.লীগকে নিষিদ্ধ : আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল গতকাল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রশ্নে উপদেষ্টা পরিষদে কোনো দ্বিমত নেই মন্তব্য করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের সুযোগ রাখার লক্ষ্যে আইসিটি আইনে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান আইন মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় ছিল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমি নিজে এটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করেছি। আমাদের (উপদেষ্টা পরিষদের) মধ্যে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্নে কোনো দ্বিমত নেই।
আইন উপদেষ্টা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরো লিখেছেন, আইসিটি আইন চাইলেই আমরা কয়েক দিনের মধ্যে সংশোধন করতে পারব। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস দমন আইনসহ অন্য আইনগুলোও আছে। কাজেই আইন কোনো সমস্যা না। রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় এলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে।
এদিকে যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেছেন, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফরমালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। তিনি লিখেছেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নিষিদ্ধ ও রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্নকরণ নিশ্চিত করাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার।
তবে সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে যমুনার সামনে অবস্থান অব্যাহত রাখে আন্দোলনকারীরা। এমনকি জুমার নামাজও সেখানে আদায় করেন তারা।
এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দিকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ‘রাতের আঁধারে ঝটিকা মিছিল’ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক পোস্টের জেরের পর ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামতও নিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে সংগঠনের বিচারের বিধানও যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে গত ২০ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ অনুমোদন দেওয়া হলেও সংগঠনের বিচারের বিধানের বিষয়টি বাদ পড়ে যায়। জানা গেছে, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল ও তাদের সমমনাদের ‘সম্মতি’ না থাকায় ওই সময় পিছু হটে সরকার। ওই সময়ে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল- প্রচলিত আইনেই কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে নতুন করে দাবির মুখে সরকার এখন আবারও ওই আইনটি সংশোধন করে সংগঠনের বিচারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্ট এ বিষয়ে একটি বর্ণনাও তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কোনো দল বা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে। এই আইনের অধীনে গত ২০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। একই আইনে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার বছর বছর ১ আগস্ট জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দুটি সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগকেই শিগগিরই এ আইনের অধীন নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে সরকার।
সরকারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই আন্দোলনের পক্ষে থাকা দলগুলোর মতামত গ্রহণ করবেন। সব দলের সঙ্গে ঐকমত্য হলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পথে এগোবে সরকার। এক্ষেত্রে আইসিটি আইন সংশোধন করে সংগঠনের বিচারের বিধানটি যুক্ত করা হবে। দলগুলো সম্মতি দিলে বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের সব ধরনের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের আদেশ দেওয়া হতে পারে। এর বাইরে দলগুলোর সায় মিললে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর অধীন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
এদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম ও ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন শাহবাগ অবরোধ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, টিএসসি, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও বাংলামোটরগামী রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।