সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। গত শুক্রবারও খুচরাবাজারে ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু গত শনিবার থেকে হঠাৎ দাম বেড়ে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়েছে। মোকামগুলোতে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে, এর দামও কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বেশির ভাগ সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, নয়াবাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাজারের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। কারওয়ানবাজারের খুচরা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা রাসেল মিয়া বলেন, চার থেকে পাঁচ দিন আগে থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেন বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আড়তে দামে বেড়েছে, আমরা বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামেই বিক্রি করছি।
একই বাজারের পাইকারি বিক্রেতা (আড়তদার) বাবুল মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ২২০ টাকা, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা। দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মোকামগুলোতে পেঁয়াজের সরবরাহ কম তাই দাম বেড়েছে। চলতি বছর পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ায় মৌসুমের শুরুতে গত বছরের তুলনায় দাম কম ছিল। চাষিদের কাছে এখন পেঁয়াজ নেই। এ ছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বর্তমানে দাম বেড়েছে।
ডিমের দাম কিছুটা বেড়ে মুরগির ডিম বড় বাজারে ডজনপ্রতি ১২৫ টাকা থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ১০ টাকার মতো বেড়েছে।
জনতা রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী রাইসুল ইসলাম বলেন, নতুন করে চালের দাম বাড়েনি, নতুন ২৮ জাতের চাল বাজারে আসায় কিছুটা কমে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে চালের দাম আরো কমতে পারে। তবে মিনিকেট চাল চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটার দামও কেজিতে দুই টাকা বেড়ে মানভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনি ও ডালের দাম আগের মতোই রয়েছে। চিনির কেজি ১২০ টাকা এবং মসুর ডালের মানভেদে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম বেড়েছে। বিক্রেতা মাহফুজ বলেন, এতদিন বাজারে শীতের সবজি ছিল তাই দামও কম ছিল। কিন্তু শীতের সবজির সরবরাহ শেষ হয়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। বর্তমানে কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, আলু ২৫, করলা ৭০, কাঁকরোল ১২০, পটোল ৫০ থেকে ৬০, পেঁপে ৫০, গাজর ৩০ এবং শসা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজির কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহের তুলনায় সবজির প্রকার ও মানভেদে দাম বেড়েছে।
সবজির দাম বাড়লেও বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩০-২৮০ টাকা। গরু ও খাসির গোশতের দাম ঈদের আগের তুলনায় কমেছে। গতকাল গরুর মাংস ৭৪০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির গোশত ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন।