ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। গত তিন মাসে ৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা গেছে। গত বছরও পাঁচজন জিকা ভাইরাসে পাঁচজন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত।
এদের মধ্যে চার জন শনাক্ত হয়েছেন আইসিডিডিআর,বিতে এবং বাকী চারজন এভারকেয়ার হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করেছিলেন। তারা সবাই ঢাকার বাসিন্দা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আট জনই স্থানীয়ভাবেই এই রোগে সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের তেমন কোনো শারীরিক জটিলতাও ছিল না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গবেষকরা বলছেন, জিকার পাশাপাশি ঢাকা শহরে এখন চিকুনগুনিয়ায় অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অর্থ ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া— এই তিন রোগে ঢাকা শহরের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগ তিনটি ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে।
আইইডিসিআর জানিয়েছে, জিকায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে, জ্বর ও ব্যথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কাছের সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে বা রোগীকে ভর্তি করাতে হবে।
জিকা ভাইরাস এইডিস মশাবাহিত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর, হাল্কা মাথা ব্যথা, অবসাদগ্রস্ততা, কনজাংটিভাইটিস, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, পেশীতে ব্যথা, শরীরে লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি ওঠার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
জিকা ভাইরাসের দুটি ধরন-আফ্রিকান এবং এশিয়ান। ঢাকায় পাওয়া জিকা ভাইরাস আক্রান্তরা এশিয়ান ধরনে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম।
তিনি বলেন, “আক্রান্তরা সবাই সুস্থ আছেন, কোনো সমস্যা হয়নি। তাদের কারও বাইরে যাওয়ার কোনো ইতিহাস নাই। তার মানে সংক্রমণটা দেশের ভেতরেই হয়েছে।”
বাংলাদেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ঝুঁকি এই মুহূর্তে নাই। ভবিষ্যতে এই রোগটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। জিবিএস (Guillain-Barré syndrome) আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে গর্ভবতী মায়েরা। আমাদের এখানে যে স্ট্রেইন পাওয়া গেছে সেটা এমন হবে কি না তা পরীক্ষা না করে বলা যাবে না।”