মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

আ.লীগের মতো করলে আমাদেরও একই দশা হবে: মির্জা ফখরুল

  • সময়: বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২.৩৭ পিএম
  • ২৮ জন

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আজ মুক্ত বাতাসে আমরা বাস করছি। কিন্তু মনে রাখবেন সেই পর্যন্তই মুক্ত ও স্বাধীন থাকবে, যতদিন আমরা মুক্ত ও স্বাধীন রাখতে পারব। আমরা যদি আওয়ামী লীগের মতো শুরু করি, তাহলে কি টিকতে পারব? আমাদেরও একই রকম দশা হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে অনুরোধ, মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। আপনারা নিজেদের মানুষের কাছে প্রিয় বানান। কারও ওপর অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতন করবেন না।’

বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ঈদগাহ মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের আমানত। তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। এ আমানতকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। সামনে পূজা আসছে। পূজাকে কেন্দ্র করে কোথাও যেন অঘটন না ঘটে, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশে যে বিজয় অর্জন হয়েছে, সেই বিজয় কিন্তু নষ্ট হতে দেবেন না। যে সুযোগ আসছে দেশকে সুস্থ করার, ভালো করার, সেটা যেন না হারাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের জন্য আওয়ামী লীগ আয়নাঘর বানিয়েছিল। এ ভয়াবহ দানব ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার দুই হাজার মানুষকে খুন করেছে। গুলিতে কারও হাত চলে গেছে, কারও পা চলে গেছে, কারও মাথার খুলি উড়ে গেছে। এসব মানুষকে হাসিনা খুন করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৬ বছরে আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি। শেখ হাসিনার সরকার আমাদের নির্যাতন করেছে। বিএনপি-জামায়াত করার অপরাধে আপনাদের জেলে পুরে রাখা হয়েছে। সেই অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। যেই হাসিনা সবচেয়ে প্রতাপশালী নেতা হয়েছিলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে; সেই প্রতাপশালী শেখ হাসিনা আজ ভারতে আশ্রয় নিয়ে করুণ অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। আর যারা আমাদের ওপর জুলুম করতেন, জমি-ব্যবসা নিয়ে নিতেন, তারা জেলের ভেতর চলে গেছে।

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদের আমাকে বিদ্রুপ করে বলতেন, ‘আমরা তো পালাব না। যদি পালাতেই হয়, তবে দেশের বাইরে যাব না।’ আমার নাম ধরে বলতেন, ‘ফখরুল আপনি কি আপনার বাসায় আমাকে জায়গা দেবেন না?’ এখন তাকে (ওবায়দুল কাদের) বলতে চাই, আপনি আসেন, আমার বাসাতেই এসে ওঠেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার বলছে, কিছু কিছু জিনিস আওয়ামী লীগ সরকার খুবই খারাপ করে দিয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি হলো ভোটের ব্যবস্থা। এটা ঠিক করা দরকার। সবাই যাতে ভোট দিতে পারে। যার ভোট সেই দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে, এমন একটা ভোটের মধ্য দিয়ে আমরা প্রতিনিধি নির্বাচন করব। এ সময়টুকু অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকে দিতে হবে। তারা সবাই নিরপেক্ষ মানুষ, কোনো দল করেন না। কিন্তু দেশকে ভালোবাসেন। তারা কাজ শুরু করেছেন। আমাদের উচিত হবে তাদের সহযোগিতা করা।

ভারত সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাশেই ভারত। ওরা অনেক খারাপ কাজ করে। সীমান্তে আমাদের লোকজনকে গুলি করে মেরে দেয়। আমরা তাদের সঙ্গে ভালোভাবে প্রতিবেশীর মতো থাকতে চাই। কিন্তু আমাদের ওপর যদি অন্যায়-অত্যাচার হয়, তার প্রতিবাদ আমরা জানাব।’

তিনি বলেন, ১১ বার কারাগারে গিয়েছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বছরের পর বছর লড়াই-সংগ্রাম করেছি। আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ে অসংখ্য ছেলেকে গুলি করেছে, অসংখ্য মামলা হয়েছে। বারবার জেলে গিয়েছে আমাদের ছেলেরা; কিন্তু কখনো সত্যের পথ থেকে সরে দাঁড়ায়নি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি নুর করিম, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহের দুলাল, হরিপুর উপজেলা বিএনপির আবু তাহেরসহ জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com