আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলি এবং তার সহযোগী মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা যায়, জেলা সদরের কালীশংকরপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকায় সোনার বাংলা মসজিদের পাশে একটি বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। এ সময় তার কাছ থেকে ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
যৌথবাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পর থেকে আত্মগোপণে থাকা এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছিল। তারা ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিশধারী, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষিত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী। অবশেষে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে কুষ্টিয়া জেলখানা এলাকার বাসিন্দা সাবেক আওয়ামী লীগ এমপি সোহরাবের পাশের বাড়ি থেকে যৌথবাহিনীর একটি বিশেষ টিম গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
নব্বইয়ের দশকে ঢাকার অপরাধজগতের আলোচিত নাম ছিল সুব্রত বাইন। আধিপত্য বিস্তার করে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিতে তার নাম আসা ছিল তখনকার নিয়মিত ঘটনা। এসব কাজ করতে গিয়ে অসংখ্য খুন ও জখমের ঘটনাও ঘটেছে।
২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে নামের তালিকা ঘোষণা করেছিল, তাদের অন্যতম ছিল এই সুব্রত বাইন। তার নামে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। তাকে ধরিয়ে দিতে তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
অন্যদিকে মোল্লা মাসুদ ২০১৫ সালে ভারতে ধরা পড়ে বলে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সে জামিনে মুক্ত হয় এবং ভারতেই অবস্থান করেছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল।
মোল্লা মাসুদ রাজধানীর মতিঝিল ও গোপীবাগ এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো। সুব্রত বাইনের হাত ধরেই মোল্লা মাসুদ অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ে। ২০০৩ সালের পরে তাকে আর বাংলাদেশে দেখা যায়নি। ভারতীয় নাগরিক রিজিয়া সুলতানাকে বিয়ে করে সেখানে বসবাস করছিল বলেও জানা যায়।