বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

৪০-৭০ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

  • সময়: বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১২.১৪ পিএম
  • ৫২ জন
সংগ্রহীত ছবি

আসন্ন পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরসহ বিভিন্ন উপলক্ষে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৪০ দিন বন্ধ থাকবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ক্লাস হবে। এরই মধ্যে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির নোটিস টাঙিয়ে দিয়েছে।

এ ছাড়া আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ সময় বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকবে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র। সে সময়ও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তাই কেন্দ্র থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো টানা দুই মাস ১০ দিন বন্ধ থাকবে।

রমজানে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখায় অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে দীর্ঘদিনের এই ছুটি নিয়ে অভিভাবকদের একটি সংগঠন ভিন্নমত প্রকাশ করেছে।

চলতি শিক্ষাবর্ষের সরকারি ছুটির ক্যালেন্ডার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পবিত্র রমজান, দোলযাত্রা, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, জুমাতুল বিদা, শবেকদর ও ঈদুল ফিতরের ছুটি আগামী ২ মার্চ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৮ এপ্রিল। আর রমজান শুরু হবে ১ বা ২ মার্চ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ শুক্র ও শনিবারের ছুটি থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সর্বশেষ ক্লাস হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। সে হিসাবে টানা ৪০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলো বন্ধ থাকবে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত আর প্রাথমিক স্কুলে ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ছুটি শুরু হয়ে চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত।

৪০ দিনের ছুটির বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. ইউনুছ ফারুকী বলেন, বিভিন্ন ছুটি মিলিয়ে প্রায় ৪০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সরকারি শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী এ ছুটি থাকবে। এ ছুটি সরকারি, বেসরকারি সব পর্যায়ের স্কুলের জন্য প্রযোজ্য।

এদিকে পবিত্র রমজান মাসসহ দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি বেশিরভাগ অভিভাবকই ছুটির এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তবে ঢাকাকেন্দ্রিক অভিভাবকদের একটি সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম ২০ রমজান পর্যন্ত স্কুল খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কলেজের শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ জানান, আমাদের বছরের মোট ছুটি (৭১ দিন) ঠিকই থাকছে। অন্যবার রমজানে ছুটি কমিয়ে অন্যদিকে বাড়ানো হলেও এবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।

একই ধরনের মন্তব্য করে স্কুলশিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, রমজানে অনেক স্কুলশিক্ষার্থী রোজা থাকে। তাই স্কুল খোলা থাকলে তাদের কষ্ট হয়। এজন্য স্কুল বন্ধ রাখাই যুক্তিযুক্ত।

একাধিক স্কুলের অভিভাবকরাও এই ছুটির সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, রমজানে স্কুল খোলা থাকলে সন্তানদের পাশাপাশি তাদেরও বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তবে কোচিং-প্রাইভেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা রোজার মাসেও স্কুল খোলা রাখার পক্ষে। আর কোচিং-প্রাইভেট চালু থাকলে সন্তানদের এমনিতেই কোচিংয়ে আনা-নেওয়া করতে হয়। সে সময় স্কুল খোলা থাকলেও তাদের সুবিধা হয় বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেন।

এদিকে ২০ রমজান পর্যন্ত স্কুল খোলা রাখার দাবি জানিয়ে গত সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ডিজি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। ওই দিন বিকালে শিক্ষা ভবনে গিয়ে ডিজি অধ্যাপক ড. আজাদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মো. জিয়াউল কবির দুলু এবং সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া। এ সময় মাউশির সাবেক ডিজি অধ্যাপক রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে রমজানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। তারা বলেন, এখন পর্যন্ত অনেক স্কুলে সব পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়নি। বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক উৎসব, শিক্ষা সফর শেষ করতে পারেনি। শিক্ষা কার্যক্রম ও শিখনে ঘাটতি রয়েছে। রমজান ও এসএসসি পরীক্ষায় বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

লেখাঃ রকীবুল হক

সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com