বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন

তিন মাস পর মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে

  • সময়: বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১০.১৪ এএম
  • ৮৭ জন

দেশের অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ধীরে ধীরে কাটছে। দেশের নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। সরকারি হিসেবে, তিন মাস পর দেশের গড় মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে এসেছে। জানুয়ারিতে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে এসেছে। এর আগে সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে ছিল। জানুয়ারিতে গড় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনও ১০ শতাংশের বেশি। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত মাসিক ভোক্তা মূল্য সূচকে (সিপিআই) এ তথ্য উঠে এসেছে।

জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে যে পণ্য কিনতে হয়েছিল ১০০ টাকায়, এ বছরের জানুয়ারিতে তা কিনতে হয়েছে ১০৯ টাকা ৯৪ পয়সায়। খাদ্যপণ্য কিনতে হয়েছে ১১০ টাকা ৭২ পয়সায়।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চলতি অর্থবছর গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যেকোনো দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকও দেরী করে হলেও নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। ব্যাংকগুলোতে সুদের হার এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়েছে, তাতে খুব একটা সফলতা আসেনি।

বিবিএসের জানুয়ারি মাসের তথ্য বলছে, গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি গত ডিসেম্বরেও ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। বর্তমানে দেশে সবজির মৌসুম চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা সবজির দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে ভোক্তা পর্যায়ে। তবে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে এখনও ভোক্তার ক্রয়সীমার চেয়েও বেশি দাম রয়েছে। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি গত মাসের চেয়ে কিছুটা বেড়ে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ হয়েছে। এটি ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।

শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি: দেশের গড় মূল্যস্ফীতি কমলেও শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার ক্ষেত্রে কষ্ট বেশি। জানুয়ারি মাসে গ্রামাঞ্চলে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে নেমেছে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরের খাদ্যের দাম কম। গত মাসে গ্রাম এলাকায় খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

এদিকে মূল্যস্ফীতির প্রভাব কমতে আরও দুই-তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। জুন মাস নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৬-৭ শতাংশের ঘরে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেছেন, বাড়তি মূল্যস্ফীতিতে মানুষ সমস্যায় রয়েছে, এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে তা কমাতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমতে আরও দুই থেকে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘সরকার আসন্ন রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেবে। এসব উদ্যোগের ফলে আগামী জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছে সরকার।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে মাসভিত্তিক সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে একই সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছিল।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com