সংবাদ সম্মেলনে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মাহমুদ আশিক চৌধুরী দাবি করেছেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আড়াই লাখ লোকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। অঞ্চলগুলো হচ্ছে, ন্যাশনাল ইকনোমিক জোন, সিরাজগঞ্জ ইকনোমিক জোন, জামালপুর ইকনোমিক জোন, মহেশখালী ইকনোমিক জোন ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজ ইকনোমিক জোন। দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে মোট সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মাহমুদ আশিক চৌধুরী আগামী দিনের পরিকল্পনা তুলে ধরতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
বেজা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দীর্ঘ মেয়াদি অনেক পরিকল্পনার কথা বলে থাকি। কিন্তু দেখা যায় এসব পরিকল্পনার খুব কমই বাস্তবায়ন ঘটে। এ জন্য আমরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ এবং অর্জনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছি। আমরা ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির কথা শুনে আসছি। কিন্তু এতো সংখ্যক জোন আমাদের আদৌ প্রয়োজন আছে কি না এবং ১০০টি ইকনোমিক জোন হতে হবে, আমি বিষয়টি সেভাবে দেখি না। আপাতত আগামী ২ বছরের মধ্যে ৫টি এবং ৫ বছরের মধ্যে আরও ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তত করা হবে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে মোট ১৯টি অর্থনৈতিক জোনে শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব শিল্প কারখানায় ১২২টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কাজ করছে এবং এতে ৪৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান বেজার চেয়ারম্যান। তিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেরও নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
আশিক চৌধুরী বলেন, আমাদের বছরে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের কম। কিন্তু আমাদের কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রয়োজন। বিনিয়োগের গতি সঞ্চারে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো নিরসনে কাজ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করছি যাতে ব্যবসায়ীরা একই জায়গা থেকে সব ধরনের সেবা পেতে পারেন। তিনি বেজার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্ববান জানান।
অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে এখনও গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। শ্রমিকদের আবাসিক সংকটের কারণে কলকারখানায় উৎপাদনে বিঘ্ন হচ্ছে জানিয়ে বলেন, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে ফেনির একটি সংযোগ সেতু স্থাপনের কথা আমরা বিবেচনা করছি যাতে ফেনি থেকে মিরসরাইতে গিয়ে শ্রমিকরা কাজ করতে পারে। গাজীপুরে শ্রমিকদের একটি অংশ মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করতে পারে। কিন্তু আবাসিক সংকট এক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা বলে জানান তিনি।
বিক্ষিপ্তভাবে না করে প্রয়োজনের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক জোন গঠনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের বস্ত্র, পাট বা অনেক শিল্প কারখানা রয়েছে যেগুলো হয় বন্ধ রয়েছে কিংবা বড় ধরনের লোকসানে রয়েছে। সেসব শিল্প কারখানার অবকাঠামোগত সুবিধা রয়েছে। সেসব জায়গায় ইকনোমিক জোন তৈরি ও বর্তমানে ইকনোমিক জোনের অব্যবহৃত জমিতে সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট গড়ে তোলার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান বেজা চেয়ারম্যান।