মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন

সেই চীনেই নতুন ভাইরাসের হানা, উদ্বেগ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে

  • সময়: রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ৫.১০ পিএম
  • ৮ জন

গোটা পৃথিবীকে স্থবির করে দিয়েছিল করোনাভাইরাস। ভয়ংকর সেই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন বলেই মনে করা হয়। এবার সেই চীনেরই কয়েকটি প্রদেশে ফের হানা দিচ্ছে নতুন এক ভাইরাস। শুক্রবার থেকে এমন খবরেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এর নেপথ্য কারণ অবশ্য সমাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও।

সেই ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। মুখে মাস্ক পরে চিন্তিত মুখে বসে রয়েছেন রোগীর পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়-পরিজন। রোগীরা শুয়ে রয়েছেন বিছানায়।

ভিডিওগুলোতে দাবি করা হয়, রোগীদের প্রায় প্রত্যেকেই হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এ আক্রান্ত। যদিও সেই ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি।

চীনও স্পষ্ট করেছে, এইচএমপিভি নিয়ে চিন্তার মতো কিছু নেই। চীনের সরকার পুরো বিষয়টিকে ‘শীতকালীন সংক্রমণ’ বলে ব্যাখ্যা করেছে। দায়ী করেছে মৌসুমকেই। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যটক এবং নাগরিকদের আশ্বস্ত করে বলেছে, সে দেশে ভ্রমণ সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন, নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

তার কথায়, শীতের মৌসুমে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের প্রবণতা খুব বেশি। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি, সরকার চীনে আগত বিদেশিদের স্বাস্থ্য নিয়ে যত্নশীল।

নয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি চীনের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের থিকথিকে ভিড়ের যে ছবি এবং ভিডিও সমাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, সেই প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন এই মুখপাত্র। তার দাবি, ভাইরাস মারাত্মক নয়। সংক্রমণের হারও গত বছরের তুলনায় কম।

কোভিড-১৯ ছড়ানোর পাঁচ বছর পরে চীনে ফের নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। এই ভাইরাসের খবর প্রকাশ্যে আসার পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বাড়ছে।

অবশ্য এইচএমপিভির সংক্রমণ নতুন নয়। সেই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল প্রায় দু’দশক আগে, ২০০১ সালে।

নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞেরা ২০০১ সালে শিশুদের শ্বাসযন্ত্রে প্রথম এই ভাইরাসের নমুনা শনাক্ত করেন। তারপর ২৪ বছর কেটে গেছে। তবে সেই ভাইরাসের কোনো টিকা তৈরি হয়নি।

অন্যদিকে সেরোলজিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, মেটানিউমোভাইরাস কমপক্ষে ৬০ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে বিদ্যমান এবং সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের প্যাথোজেন হিসাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। মূলত শীতকালে এর সংক্রমণ লক্ষ করা যায়।

মেটানিউমোভাইরাসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, সর্দি এবং কাশি। খুব কম সংখ্যক রোগী নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হতে পারেন। মৃত্যুর হারও নগণ্য।

কিন্তু এইচএমপিভির সংক্রমণ কীভাবে সারে? ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকার অসরকারি সংস্থা ‘ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক’ জানিয়েছে, মেটানিউমোভাইরাসের চিকিৎসা হয় এমন কোনও ‘অ্যান্টিভাইরাল’ ওষুধ নেই। চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ও তাদের ওয়েবসাইটে সেই ভাইরাসের কোনো টিকার কথা উল্লেখ করেনি।

এইচএমপিভি আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি বা শিশু গুরুতর অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তার শুশ্রূষা করা হয়। চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন, কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, সংক্রামিত ব্যক্তির নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত এবং ভিড় জায়গায় মাস্ক পরে থাকা উচিত। এ ছাড়াও, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘন ঘন হাত ধোয়া আবশ্যক। জীবাণুমুক্তকরণের দিকেও বিশেষ নজর থাকা উচিত।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com