সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

কাঁচাবাজারে স্বস্তি ফিরলেও চাল ও মুরগিতে অস্বস্তি

  • সময়: শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ৮.৫৬ এএম
  • ৯ জন

দেশে আলু, পেঁয়াজ ও শাক-সবজিসহ কাঁচাবাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম কমলেও চালের দাম ও মুরগির দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারে পণ্যের দাম আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে ভোজ্যতেলের সংকট কেটে সরবরাহ পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক, দামও সামান্য কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও পুরান ঢাকার নয়াবাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

কারওয়ানবাজারের চালের আড়তে গিয়ে কথা হয় বিসমিল্লাহ রাইস এজেন্সির মালিক শহিদুল্লাহ সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে চালের বাজার খুবই অস্থির। গত দুই মাসে সরু জাতের মিনিকেট চালের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিল মালিকরা বলছেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় চালের দাম বেড়েছে। এবার ২০ জেলায় ভয়াবহ বন্যার কারণে ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় ভরা মৌসুমেও বাজারে ধানের সরবরাহ নেই, তাই চালের বাজার অস্থির।

জনতা রাইস এজেন্সির হাজী ওসমান বলেন, অগ্রহায়ণ শেষে পৌষের মাঝামাঝি সময়ে চালের বাজার এমন অস্থির হয়ে উঠবে— তা কল্পনাও করা যায় না। গত দুই মাসে মোটা চালের দাম খুব বেশি হেরফের না হলেও সরু জাতের মিনিকেট চালের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এটা অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক। চালের বাজারে সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

কারওয়ান বাজারের খুচরা (মুদি) বিক্রেতা মা-বাবার দোয়া স্টোরের মালিক মো. সবুজ বলেন, বর্তমানের সব ধরনের সয়াবিন তেলের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি জানান, ফ্রেশ কোম্পানির তেলের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা করে কমেছে। এই কোম্পানির তেলের ৫ লিটারের বোতল বর্তমানে ৮৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগেও ৮৫০ টাকায় বিক্রি হতো। অন্যান্য কোম্পানির তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

কারওয়ানবাজারের চালের আড়ৎ ঘুরে জানা যায়, গেল মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে সব ধরনের চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ বিষয়ে রনি রাইস এজেন্সির মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, মোটা চালের দামে তেমন একটা হেরফের না হলেও সরু জাতের তথা মিনিকেট চালের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে তিনি দাম বাড়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি।

এদিকে মুরগির বাজারও বেশ অস্থির। গতকাল কারওয়ানবাজারে পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়, যা সপ্তাহ খানেক আগেও ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, লেয়ার ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। বর্তমানে মুরগির ডিম ১৩০ টাকায় ডজন বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ানবাজারের কাঁচা সবজি বিক্রেতা রাসেল মিয়া বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরেই কাঁচা তরিতরকারির দাম নিম্নমুখী। চলতি সপ্তাহে সবজির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে এবং আগামী সপ্তাহে আরও কমতে পারে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কমেছে নতুন আলুর দামও। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে নতুন ও পুরোনো আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। যা সপ্তাহ দুয়েক আগেও ১০০ টাকার আশপাশে ছিল।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। আর আমদানি পেঁয়াজের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি ১১০ টাকা। তবে এক বছরের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমে চার ভাগের একভাগে নেমে এসেছে।

চালের দামে অস্বস্তি প্রকাশ করে নয়াবাজারের ক্রেতা রহিমা বলেন, দাম প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে। গত সপ্তাহে যেখানে ব্রি-২৮ জাতের চাল ৫৮ টাকায় কিনেছিলাম, সেখানে আজ তা ৬০-৬১ টাকায় কিনেছি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো গরিব মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।

সাহারুল ইসলাম নামের অপর ক্রেতা জানান, ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ভালো মানের চাল গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এটা খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কষ্টদায়ক। এ ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com