রাজধানীসহ সারাদেশের ৩৩ লাখ মানুষ গত শনিবার পর্যন্ত ভোটার হতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছেন। এরপরও অনেক নাগরিক তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন। কিন্তু তথ্য সংগ্রহের সময় বাড়াবে না বলে জানিয়েছে কমিশন। এর মধ্যেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্ধারিত ১৫ দিনের ভোটার তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হচ্ছে। আজ সোমবার পর্যন্ত যারা ভোটার হতে ফরম পূরণ করবেন আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত তারা ছবি তুলে ভোটার হবেন।
জানা গেছে, এবার নতুন ৬২ লাখ ভোটার নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছে।
ইসি বলছে, বাদ যারা পড়েছেন ছবি তোলার কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিক ফরম পূরণ করে তারা ভোটার হতে পারবেন। ভোটার হওয়া চলমান প্রক্রিয়া।
এদিকে তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মত পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাননি। বেশিরভাগ এলাকায় সংশ্লিষ্ট স্কুলে বসে ভোটার তথ্য সংগ্রহের কাজ করেছেন। তবে ইসি ও তথ্য সংগ্রহকারীরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, আমরা গিয়েছিলাম, কিন্তু অনেককে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। আবার অনেকের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল না। এ কারণে কিছুসংখ্যক মানুষ বাদ পড়তে পারেন।
কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা খলিলুর রহমান। আমার দেশকে তিনি বলেন, বাড়িতে আসেননি ইসির কোনো লোক। এমনকি মহল্লায়ও দেখিনি। তথ্য সংগ্রহকারীরা স্কুলে বসেই দায়সারা কাজ করায় অনেক ভোটার বাদ পড়েছেন।
খিলক্ষেত এলাকার কুড়াতলা মামা হোটেল গলির বাসিন্দা নিবরাজ বিনতে কবির। কলেজপড়ুয়া নিবরাজ এবার নতুন ভোটার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনো তথ্য সংগ্রহকারী গতকাল রোববার বিকাল পর্যন্ত তার বাসায় যায়নি। ফলে হালনাগাদ তালিকা থেকে তিনি বাদ পড়েছেন।
ভাষানটেক স্কুল ও কলেজের সিনিয়র শিক্ষক ও তথ্য সংগ্রহকারী হুমায়ুন কবির আমার দেশকে বলেন, বাড়িতে বাড়িতে আমি গিয়েছি। এরপরও কে অভিযোগ দিয়েছে জানি না। একই কথা বলেন, মাদারটেক আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হানিফ। তিনি বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছি। এ বিষয়ে আমি অভিজ্ঞ।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ আমার দেশকে বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাননি এ কথাটি সঠিক নয়। আপনি দেখেন, ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ ফরম পূরণ করেছেন। এ সংখ্যা আরেকটু বাড়বে। তারপরও কোনো এলাকায় কিংবা কোনো বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারী যাননি, তথ্য পেলে সেখানে লোক পাঠিয়ে বাদ পড়াদের নাম তালিকাভুক্ত করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী মানুষ ভোটার হতে আবেদন করেনি।
প্রায় ৩৩ লাখ আবেদন জমা
গত ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইসির ১০টি অঞ্চলে প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ ভোটার ফরম পূরণ করেছেন। এর মধ্যে রাজশাহী এলাকায় সবচেয়ে বেশি পাঁচ লাখ সাত হাজার ৬১৪ ফরম পূরণ করা হয়েছে। কম ফরম পূরণ করা হয়েছে চট্টগ্রামে এক লাখ ৩৯ হাজার ৬২৩। মারা যাওয়ায় ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে সাড়ে ৯ লাখ।