মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ফায়ার সার্ভিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত বছর দেশে ২৬ হাজার ৬৫৯টি অগ্নিকাণ্ড এবং দিনে গড়ে ৭৩টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ফায়ার সার্ভিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত বছর দেশে ২৬ হাজার ৬৫৯টি অগ্নিকাণ্ড এবং দিনে গড়ে ৭৩টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৬ হাজার ৬৫৯টি আগুনের মধ্যে বৈদ্যুতিক গোলযোগে ৯ হাজার ৬৯টি ঘটেছে। এটি মোট আগুন লাগার ঘটনার ৩৪ শতাংশ। এছাড়া বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা থেকে ৪ হাজার ১৩৯টি (১৫.৫২%), চুলা থেকে ৩ হাজার ৫৬টি (১১.৪৬%), উচ্ছৃঙ্খল জনতার লাগিয়ে দেওয়া ৭৮৯টি (২.৯৫%), ছোটদের আগুন নিয়ে খেলার কারণে ৭৫৯টি (২.৮৪%)।
সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে বাসাবাড়ি বা আবাসিক ভবনে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সারা দেশে বাসাবাড়িতে মোট ৭ হাজার ১৩১টি আগুন লাগে, যা মোট আগুনের ২৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া খড়ের গাদায় ৪ হাজার ৫১৩টি (১৬.৯২%), রান্না ঘরে ২ হাজার ৪১১টি (৯.০৪%), দোকানে ১ হাজার ৮৮৭টি, হাটবাজারে ৯১১টি, শপিং মলে ৪৮১টি, পোশাকশিল্প ব্যতীত কলকারখানায় ৪৯৪টি আগুনের ঘটনা ঘটে। এর পাশাপাশি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ২৩৬টি, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ২১১টি, বহুতল ভবনের আগুন (৬ তলার ওপরে) ১৫৩টি, রেস্তোরাঁ ও হোটেলে ১৫০টি, কেপিআই ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১২৯টি, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১২৬টি, পাট গুদাম-পাটকলে ১২৩টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৮৫টি, বস্তিতে ৮৪টি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭৮টি আগুনের ঘটনা ঘটে।
পরিবহনে আগুনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে সারা দেশে বাস বাদে যানবাহনে ২৬৮টি, বাসে ১১৪টি, ট্রেনে ১৩টি, লঞ্চে ৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মাসভিত্তিক অগ্নিকাণ্ডের পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি (২৭২৩টি), মার্চ (৩৪২১টি), এপ্রিল (৩৪২৬টি), মে (২৬৮৬টি) এই চার মাসে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এই চার মাসে গড়ে প্রতিদিন ১০২টি করে আগুন লেগেছে। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে ২ হাজার ৫১৪টি, জুলাই মাসে ১ হাজার ৪২৭টি, আগস্ট মাসে ২ হাজার ১৬৩টি আগুন লাগে।
এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে আহত-নিহত ব্যক্তিদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আহত ও নিহতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। সারা দেশে ৩৪১ জন আহতের মধ্যে পুরুষ ২৩৭ ও নারী ১০৪ জন এবং নিহত ১৪০ জনের মধ্যে ১০৭ জন পুরুষ ও ৩৩ জন নারী। এ ছাড়া আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাসাবাড়ি/আবাসিক ভবনে (আহত ৭২, নিহত ৩৬), গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ (আহত ৫৩, নিহত ৮) এবং রেস্তোরাঁ ও হোটেলে (আহত ৭৮, নিহত ৪৭) আগুনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ২০২৪ সালে সারা দেশে ডুবুরি কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৫৬ জন আহত ও ৭৫০ নিহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। আরও ৩০৩টি পশু, ৫০টি পাখি, ২২৭টি প্রাণি উদ্ধার করে।
২০২৪ সালে সারা দেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ৯ হাজার ১২৮টি দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে ১০ হাজার ৮২৬ জন আহত ও ২ হাজার ৪৩৭ জন নিহতদের উদ্ধার করে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪০৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৩১৯ জন আহত ও ১ হাজার ৪৮৪ জন নিহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
সারা দেশে অগ্নিপ্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ২০২৪ সালে ১৪৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এই মোবাইল কোর্টের মাধ্যেমে ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ড কমানোর জন্য সারা দেশে জনগণকে সচেতন করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ২০২৪ সালে ১৮ হাজার ৯৮৩টি মহড়া, ৩ হাজার ৩৬টি সার্ভে, ১৫ হাজার ৬৮৩টি গণসংযোগ করে।
সূত্রঃ কালের কন্ঠ