জাতীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি নুরুল হক নুর। হামলাকারীদের ধরতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি।
গতকাল বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ আল্টিমেটাম দেন।
তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করলে আমাদের নেতাকর্মীরাই তাদের ধরে এনে ব্যবস্থা নেবে। হামলার নেপথ্যে সারজিসের নাম আসছে। তবে আমরা এটি বিশ্বাস করি না। হামলাকারীরা সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেটির নোটিশ আবার সাংবাদিকদের দিয়েছে সারজিস। আশা করি এ বিষয়ে সে তার অবস্থান ক্লিয়ার করবে। এ হামলার পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
তিনি প্রশ্ন করেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের প্রোগ্রামে কীভাবে ছুরি আনা হলো? জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক ভুঁইফোড় সংগঠন গঠন করা হচ্ছে, সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমকে আরও সচেতন থাকতে হবে।
বিপ্লবী অংশগ্রহণকারীদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া এ সরকার ৬ মাস টিকবে না। জনসমর্থনের বাইরে গেলে অন্তর্বর্তী সরকার এক সপ্তাহও টিকতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নুর বলেন, ছাত্রলীগের স্পাই হিসেবে আন্দোলনে এসে ১০-১২ দিন মিডিয়ার সামনে কথা বলে কেউ কেউ আজ বড় নেতা হয়ে গেছে। আমরা গত ৭ বছর যাবৎ লড়াই সংগ্রাম করে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। আমরা কেউ উপদেষ্টা হতে চাইনি, আমরা বলেছি এই সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই, যতদিন সময় লাগে সংস্কারের জন্য এই সরকার সেই সময় নিক।
দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কীভাবে ওবায়দুল কাদের পালিয়ে গেলো, এই দাবি তুললেই হামলা করতে হবে? আমরা গণঅভ্যুত্থানের আগে মার খেয়েছি। এখন হাসিনার পতন ঘটেছে। আমরা কি এখনও মার খাবো? তাহলে এই সরকারের কি দরকার ছিল? আমাদের রক্তের ওপর এই সরকার ক্ষমতায় বসেছে। তাদের অবশ্যই জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, যেসব উপদেষ্টা জনগণের পালস বোঝে না, তাদের বাদ দিয়ে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ করুন। ফারুকের ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘেরাও করব। তার অপসারণের আন্দোলন করব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের স্পষ্ট কথা, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে কোনো আপস নয়। যারা আপস করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করবো। সিইসি বলেছেন, নিষিদ্ধ না হলে আ.লীগ নির্বাচনে যাবে। কথা ক্লিয়ার, গণহত্যার বিচারের আগে আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। ফারুক হাসানের ওপর যে বা যারা হামলা করেছে, তাদের ধরুন, নইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চেয়ারে রাখা হবে না।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, হাসান আল মামুন, মাহবুব জনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঈসমাইল বন্ধন, সহ-আইন সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ঢাবি শাখার সভাপতি সানাউল্লাহ, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, আইনজীবী অধিকার পরিষদ ঢাকা বারের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমিনুল প্রমুখ।