বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের বিকল্প নেই

  • সময়: রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮.৫৩ এএম
  • ১১ জন

দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।

তারা বলেন, শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বংস করে ভারতে পালিয়ে গেছেন। কিন্তু সেখানে বসেও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। ফ্যাসিবাদীদের খুঁজে এনে সবার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর অবস্থান নেয়ারও আহবান জানান তারা।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খেলাফত মজলিসের সাধারণ পরিষদের দ্বাদশ অধিবেশনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন নেতারা। এসময় আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবি জানায় দলটি।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আন্দোলনের সময় ছাত্রদের শ্লোগান ছিল-‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ’। আমরাও সেই ন্যায় বিচার ও সাম্যের বাংলাদেশ চাই। যেখানে ন্যায় বিচার থাকে সেখানে মানুষের আর কিছু চাওয়া লাগে না।

তিনি বলেন, দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ কোরআনের শাসন। আর এই শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন ইসলামী দলগুলোর ঐক্য। এবার যেন ইসলামি দলগুলোর মাথার ওপর কেউ কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে সরকারের নীতি আদর্শ হবে ইসলাম-এটাই বাস্তবতা। ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মনের দিক থেকে সবাই ঐক্যের কাছাকাছি এসে গেছে। সবাই পরামর্শভিত্তিক কাজ করছি। আশাকরি সবাই এক হয়ে কাজ করতে পারবো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, শেখ হাসিনা পাশের দেশে আশ্রয় নিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। আর প্রতিবেশি দেশটির মিডিয়াগুলোও বাংলাদেশের বিরুদ্ধাচারণ করছে। তিনি ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হাসিনা চলে গেছে-তোমাদের এত মাথাব্যাথা কেন? সচিবালয়ে আগুন দেয়া হচ্ছে, একেকদিন একেক গোষ্ঠী এসব করছে।

মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামীমূল্যবোধে বিশ্বাসী সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশে এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার লড়াই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই। চাওয়া যেরকমই হোক সবাই নতুন বাংলাদেশ চায়।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেন, ইসলামী দলগুলোর লক্ষ্য অভিন্ন। সবাই আল্লাহর খেলাফত প্রতিষ্ঠা চায়। প্রতিটি দল একটি প্রতিষ্ঠানের মত। যার যার স্বকীয় বৈশিষ্ট নিয়ে কোন বিরোধ হতে পারে না। আমরা ঐক্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। সেই ঐক্যের একটা ভিত তৈরি হয়ে গেছে। আমাদের অভিন্ন শত্রু ভারতীয় আধিপত্যবাদ রূখে দাঁড়াতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে, তার কার্যকারিতা আরো দৃশ্যমান করুন। প্রশাসনিক সংস্কার সহ সকল সংস্কারে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত প্রাধান্য দিন। আগুন সন্ত্রাস সহ সকল নাশকতা রুখে দিতে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা সমূহের নিরাপত্তা জোরদার করুন। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে অবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করুন। ২০২৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

অধিবেশন উদ্বোধন করেন খেলাফত মজলিসের সাবেক আমির ও বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক। বক্তব্য রাখেন সাবেক মহাসচিব অধ্যক্ষ মাসউদ খান, মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, এ এফ এম সোলাইমান চৌধুরী, রাশেদ প্রধান, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, রাশেদ খান প্রমুখ।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com