বিনা কারণে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে শহিদ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের কয়েকজন অনুসারীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এরপর থেকে অনেকটা আত্মগোপনে রয়েছে অন্য খুনিরা।
অভিযোগ রয়েছে, গণআন্দোলনের মুখে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে একের পর এক দাঙ্গা লাগানোর অপচেষ্টা করছে ভারত। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে নানা গুজব। হাসিনা সরকারের পতনের বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ভারত। যার কারণে ভারতের পক্ষ থেকে একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা রয়েছে।
তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার পর থেকে কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন বাংলাদেশে চুপ থাকলেও বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ব্যবহার করেছে বাংলাদেশে তাদের প্রতিনিধি রুমা পাল।
বাংলাদেশের লোকজন মনে করছে, ভারত বিভিন্ন প্রকার উসকানি দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে ধর্মীয় দাঙ্গা তৈরির। বিষয়টিকে অতীতের মতো ধৈর্যের সঙ্গে মোকবিলা করেছে দেশের ইসলামিক দল এবং সংগঠনগুলো। ৫ আগস্টের আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে যে কৌশল করেছিল ভারতের প্রিয় হাসিনা; সেই একইভাবে আইনজীবীকে হত্যা করে ধর্মীয় দাঙ্গা লাগিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে ভারত।
যখন ধর্মীয় দলগুলো চুপ তখন বেছে বেছে হিন্দুদেরই পুলিশ ধরছে বলে অভিযোগ করছে ভারত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক ভাইরাল হচ্ছে হাড় হিম করা মিথ্যা সংবাদের স্ক্রিনশট ও ভিডিও।
আদালতের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ইসকনকে নিষিদ্ধ করা কথা উঠলে আপাতত সে সিদ্ধান্ত নেয়নি হাইকোর্ট।
ভারতের সংবাদসংস্থা আইএনএস বলেছে, বাংলাদেশের শিবচরে ইসকন সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অথচ এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি সেখানে। বরং নিজেরাই সেন্টার বন্ধ করে আইনজীবীকে হত্যার পর।
এদিকে আইনজীবী হত্যা ঘটনার পর ফেনীতে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারত যাওয়ার সময় একজন পুরোহিতকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আটক করেছে। আটককৃত ব্যক্তির বাংলাদেশি জাতীয়পরিচয়পত্র অনুযায়ী, আশীষ পুরোহিত (৬৫), চট্টগ্রাম এনায়েত বাজার এলাকার ২৩৪, এস এ চৌধুরী লেনের মৃত নির্মল চন্দ্র পুরোহিতের ছেলে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় পরিচয়পত্র (আধার কার্ড) অনুযায়ী তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতার ঢাকুরিয়া এলাকার ১৬ নস্কর পাড়া লেনের বাসিন্দা। অর্থাৎ তিনি ভারতেরও নাগরিক।
এদিকে ধর্মীয় দলগুলোর পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও জড়িয়ে বিভিন্ন মনগড়া সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এসবের লক্ষ্য হচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেটাকে নস্যাৎ করে দেওয়া। আর সেটা করতে পারলেই তারা তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সফল হবে।