শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

কার্গো টার্মিনালের আ’গুনে রপ্তানি খাতে ক্ষ’তি ১২ হাজার কোটি টাকা

  • সময়: মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০.৪৭ এএম
  • ৩১ জন

দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় দেশের রপ্তানি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই ঘটনায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বা বারো হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার রপ্তানি ও শিল্পখাত সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে শুধু ব্যবসায়ী নয়, সরকারও বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা নষ্ট হয়েছে এবং বাজার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ইএবি সভাপতি বলেন, আমরা চাই, এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর সরকার ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করে দ্রুত পুনর্গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। শাহজালাল বিমানবন্দর দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের হৃৎপিণ্ড—এখানে এমন অঘটন আমরা আর দেখতে চাই না।

সংবাদ সম্মেলনে ইএবি নেতারা বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং জোন দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। সেখানে কোটি কোটি ডলারের পণ্য প্রতিদিন ওঠানামা করে। এমন একটি সংবেদনশীল স্থানে আগুন নিছক দুর্ঘটনা নয় বরং এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভয়াবহ দুর্বলতার প্রতিফলন।

তারা প্রশ্ন তোলেন—এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কি কোনো অটোমেটিক ফায়ার ডিটেকশন ও প্রোটেকশন সিস্টেম ছিল? আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং টিম কোথায় ছিল? বাইরে থেকে ফায়ার সার্ভিস আসতে এত সময় লাগলো কেন?

নেতারা অভিযোগ করেন, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ (সিএএবি), কাস্টমস হাউস, এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স—এই তিন পক্ষই বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালের দেখভাল ও তত্ত্বাবধানে থাকা সত্ত্বেও কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আগুনে তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত মাছ, কৃষিপণ্য, ফলমূল, ফার্মাসিউটিক্যাল কাঁচামালসহ বিভিন্ন রপ্তানি পণ্য পুড়ে গেছে। অনেক ক্রেতা তাদের অর্ডার বাতিল করেছেন এবং বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইএবি ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করে। এর মধ্যে রয়েছে— ক্ষতিগ্রস্তদের বিমা দাবির দ্রুত নিষ্পত্তি, যেসব পণ্যে বীমা কাভার ছিল না, তাদের জন্য বিশেষ সরকারি তহবিল থেকে সহায়তা, বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের আধুনিকায়ন ও নিরাপত্তা জোরদার, রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নের ব্যবস্থা, আধুনিক স্ক্যানার ও প্রযুক্তিনির্ভর মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন, কার্গো ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন ও ফায়ার প্রোটেকশন ব্যবস্থার উন্নয়ন।

রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সরকার, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, কাস্টম এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com