প্রথম দুই ওভার মেইডেন, সঙ্গে নেই দুই উইকেট। এইটুকু তথ্যই যথেষ্ট শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ কেমন খেলছে সেটা বোঝাতে। বাকি অংশে কেবলই লড়াই আর হারের ব্যবধান কত হয়, সেটার অপেক্ষার প্রহর। শেষমেশ শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে আসর শুরু করল বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লের ব্যাটিং ধসের পর জাকের আলী অনিক ও শামীম পাটোয়ারির ৬১ বলের ৮৬ রানের জুটিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৩৯ রান। টি-টোয়েন্টিতে এখন ২০০ রানও যেখানে নিরাপদ নয়, সেখানে শ্রীলঙ্কা এই বাধা টপকাতে পেরেছে বেশ সহজে। ৩২ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় আসালঙ্কার দল।
এই হারে বাংলাদেশের জন্য সুপার ফোরে ওঠার স্বপ্নটা হয়ে উঠল ফিকে। আফগানিস্তানকে তো হারাতেই হবে, সঙ্গে থাকবে রানরেটের মারপ্যাঁচের কঠিন হিসেব।
১৪০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। মোস্তাফিজুর রহমানের করা গুড লেন্থের ডেলিভারিটা ঠিকঠাক বুঝতে না পেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন কুশল মেন্ডিস। তখন স্কোরবোর্ডে লঙ্কানদের রান ১৩। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশের ইনিংসের মতোই হয়তো শুরুর দিকে কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বসবে শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে আসা লঙ্কানরা আর বিপদ হতে দেননি। লঙ্কানরা ঠিক নয়, ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কামিল মিশারা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫২ বলে ৯৫ রান যোগ করে একরকম নিশ্চিত করে দেন শ্রীলঙ্কার জয়।
শেখ মাহেদি যখন লঙ্কানদের এই জুটি ভাঙেন, তখন স্কোরবোর্ডে দলটির রান ১০৮। আর নিশাঙ্কা ক্যারিয়ারের ১৬তম ফিফটি তুলে আউট হন। মাহেদি পরে ফেরান কুশল মেন্ডিসকে। সাকিবের বলে আউট হন দাসুন শানাকা। তাতে জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি লঙ্কানদের। তিনে নামা মিশারা ৩২ বলে ৪৬ রান করে নিশ্চিত করে দেন জয়। বাংলাদেশের হয়ে দুই উইকেট নেন শেখ মাহেদি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের অধিনায়ক ম্যাচশুরুর আগে বলেছিলেন, উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ। অধিনায়কের ওই কথার কোন প্রতিধ্বনি ছিল দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও পারভেজ ইমনের ব্যাটে। দল রানের খাতা খোলার আগেই আউট তারা দুজনে। প্রথম ওভার অর্থাৎ, তামিম আউট হওয়ার ওভারে আসেনি কোন রান।
দ্বিতীয় ওভার অর্থাৎ, ইমন আউট হওয়ার ওভারও ছিল মেইডেন। প্রথম দুই ওভার মেইডেন দেওয়া বাংলাদেশ প্রথম রানের দেখা পায় ১৪তম বলে আর বাউন্ডারি আসে ২৮তম বলে। তাতে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ পায় মাত্র ৩০ রানের দেখা। তবে শুরুর ওই ধাক্কা ছিল ১০ম ওভার পর্যন্ত। তখন স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান ছিল ৫ উইকেটে ৫৩ রান।
পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশ আর কোন উইকেট না হারায়নি। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট চালিয়ে জাকের ও শামীম বাংলাদেশের সংগ্রহ নিয়ে যান ১৩৯ রানে। জাকের ও শামীমের ব্যাটে আসে যথাক্রমে ৪১ ও ৪২ রান। এর আগে অধিনায়ক লিটন দাস ২৬ বলে করেন ২৮ রান। শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২৫ রানে নেন দুই উইকেট। একটি করে উইকেট নেন নুয়ান থুসারা ও দুশমন্থ চামিরা একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৯/৫ (শামীম ৪২*, জাকের ৪১*, লিটন ২৮; হাসারাঙ্গা ২/২৫, তুষারা ১/১৭, চামিরা ১/১৭)।
শ্রীলঙ্কা: ১৪.৪ ওভারে ১৪০/৪ (নিশাঙ্কা ৫০, মিশারা ৪৬*; মেহেদী ২/২৯, তানজিম ১/২৩, মোস্তাফিজ ১/৩৫)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে জয়ী।