রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ কমপ্লিট শাটডাউন

  • সময়: বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫, ৯.৩১ এএম
  • ৮৮ জন
সংগৃহীত ছবি

তিন দাবিতে বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যুমনা অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে অন্তত দেড় ঘণ্টা ধরে শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে। দীর্ঘ সময় ধরে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়ে রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়ও। গাড়ির লম্বা জটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এরপর সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবারের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, পুলিশের হামলায় তাদের ৬০ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গতকাল বিকেলে তারা প্রেস ব্রিফিং করে চলমান কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ক্ষমা চাওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। যদিও বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনায় পুলিশের আট সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঢাকায় বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য চলমান আন্দোলনের মধ্যেই গতকাল কমিটি গঠন করেছে সরকার। এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।

নবম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী পদে শুধু পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ ও ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার করা, দশম গ্রেডে যেন উচ্চ ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা এবং শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং যারা সম্পন্ন করবেন, তারাই যেন প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) লিখতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে শাহবাগ অবরোধ করেন বুয়েটসহ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল থেকেই শত শত শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে থাকেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আসার পর মিছিলটি পুলিশ আটকে দেয়। একপর্যায়ে সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পুলিশ সেখানে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে জলকামান দিয়ে পানি ছোড়া হয়। ওই সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে এসে ফের শাহবাগে অবস্থান নেন। তখন পুলিশের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। একদল শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে পরীবাগমুখী যেতে থাকলে পুলিশও এগিয়ে যায়। দফায় দফায় এমন ঘটনায় উত্তেজনা চলতেই থাকে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, শাহবাগে শিক্ষার্থীদের অবস্থানকালে সমস্যা সমাধানে সচিবালয়ে তিনজন উপদেষ্টা এটা নিয়ে কাজ করছিলেন। তাই শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছিল, শাহবাগে অবস্থান করতে। আধা ঘণ্টার ভেতরে তাদের সমস্যার সমাধান হবে। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজিও হয়েছিলেন। কিন্তু আলোচনা চলাকালীন হঠাৎ শিক্ষার্থীদের একটি দল যমুনা অভিমুখে রওনা হয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

ডিসি বলেন, ‘আন্দোলনকারী কয়েকজনের কাছে হেস্কা ধরনের চাকু ছিল। এটা কয়েকটা জায়গায় মারার কারণে আমাদের কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।’

কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন পর্যন্ত চলে গেলে তো আর কিছু করার থাকে না। তখন আন্দোলন তো আর শান্তিপূর্ণ থাকে না।’

আজ সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন: আজ বৃহস্পতিবার সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। গতকাল রাতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের সংগঠক জুবায়ের আহমেদ। কর্মসূচি ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর শাহবাগে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনায় সরকারের কমিটি গঠন: প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারীদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশের জন্য আট সদস্যের কমিটি করেছে সরকার। কমিটিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে সভাপতি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার এ কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

কমিটি গঠনের পর আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করে ন্যায্য সমাধান করার কথা জানিয়েছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

অন্যদিকে একই কথা বলেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। তিনি বলেন, ‘তারা (আন্দোলনরত প্রকৌশলী) যদি তাদের দাবিগুলো স্মারকলিপি আকারে দেন, এগুলো নিয়ে তারা অনেক রিসার্চ করেছেন, তাদের কাছে আইন-কানুন আছে, এগুলো যদি অ্যাটাচ করে দেন, আমরা অল্প সময়েই এটা সমাধান করে দিতে পারব। আমাদের কাছে কোনো আবেদন আসেনি, আমরা বিষয়টি শুনেছি।’

কমিটি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা: গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আমাদের পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করব। আমাদের দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আন্দোলনকারীদের সামনে উপস্থিত হয়ে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকারের গঠিত কমিটিকে আমরা আমাদের প্রতিনিধিত্বের অনুপযুক্ত মনে করি। ওই কমিটিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কমিটির সংস্কার করে উত্থাপিত তিন দফা দাবিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেনে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

হামলায় আহত সব শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে বহন করার দাবি জানিয়ে ওই শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলন চলাকালে সব শিক্ষার্থীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ দিয়ে এ আন্দোলনে আর কোনো ধরনের হামলা করা যাবে না। সাবেক বুয়েট শিক্ষার্থী রোকনের ওপর হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। যেসব পুলিশ সদস্য এই ন্যক্কারজনক হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদেরও বহিষ্কার করতে হবে।

চুয়েট, রুয়েট ও কুয়েটে বিক্ষোভ: এদিকে ঢাকায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে চুয়েট শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে ‘গায়েবানা জানাজা’ পড়েছেন। চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ঢাকায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম উত্তাল হয়ে উঠেছে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। এতে দুই নম্বর গেট সংযোগ সড়ক, মুরাদপুর, অক্সিজেন, চকবাজার ও মেডিকেল রোডের যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। চট্টগ্রামের রাউজান ক্যাম্পাস থেকেও অনেক শিক্ষার্থী এসে অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে ঢাকার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং তিন দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচির একপর্যায়ে সন্ধ্যা নামতেই শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধ হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে ‘গায়েবানা জানাজা’ আদায় করেন। চুয়েটের এক শিক্ষার্থী এতে ইমামতি করেন। মোনাজাতে তিনি বলেন, ‘আমরা ইন্টারিম গভর্নমেন্টের জানাজার মাধ্যমে মাগফিরাত কামনা করছি। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

জানাজা শেষে বক্তব্য দিতে গিয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ইন্টারিম গভর্নমেন্ট। আজকে শাহবাগে আমাদের ভাইদের ওপর হামলা করেছে, টর্চার করেছে। ছাত্র আন্দোলনের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে, তাদের আন্দোলনকে হত্যা করা হয়েছে।’

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, ঢাকার শাহবাগে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রুয়েট শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩টার দিকে নগরের তালাইমারী মোড়ে বাঁশ দিয়ে আটকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এদিকে নগরের অন্যতম প্রবেশপথ অবরোধ করায় মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে, ঢাকায় শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রুয়েট প্রশাসন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম সরকারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা ও আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

খুলনা ব্যুরো জানায়, ঢাকায় পুলিশের হামলার প্রতিবাদে কুয়েট শিক্ষার্থীরাও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়কের রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন। ওই সময় মহাসড়কের দুপাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে খুলনা স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস কিছুক্ষণের জন্য আটকা পড়ে।

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

ডিএমপি কমিশনারের দুঃখ প্রকাশ: ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শাহবাগে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ঘটনা তদন্তে বৃহস্পতিবার কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। শাহবাগে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তোমরা আমার পরম স্নেহের। আমার ছেলের বয়সও তোমাদের চেয়ে বেশি। তোমাদের এই কষ্ট আমাকেও কষ্ট দেয়।

পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে শুরুতে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের এম ওয়ালীউল্লাহ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিন দফা দাবি নিয়ে একটি আলোচনা সভা আয়োজন করা হবে। জনদুর্ভোগ চিন্তা করে আমরা মাঠের কর্মসূচিতে যাচ্ছি না।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com