সদ্য শুরু হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাসেই রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার। এটি আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইপিবির প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত জুলাই মাসে বেড়েছে দেশের রপ্তানি আয়। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৮১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার।
জুলাই মাসে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে। জুলাই তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারে। আর ২০২৪ সালের একই সময়ে এ আয় ছিল ৩১৭ কোটি ৮৪ লাখ ডলার।
তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ের মধ্যে ২১৭ কোটি ৮৬ লাখ ডলার এসেছে নিটওয়্যার রপ্তানি থেকে। এ খাতের রপ্তানি আয় আগের বছরের ব্যবধানে ২৬ দশমিক ০১ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া ১৭৮ কোটি ৩৯ লাখ ডলার এসেছে ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২৩ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, জুলাই মাসে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খাতের মধ্যে কৃষি পণ্য, হোম টেক্সটাইল এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। হোম টেক্সটাইলের রফতানি আয় ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারে।
এছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ২৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। জুলাই মাসে রপ্তানি হয়েছে ১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আর কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয় ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ডলারে। ২০২৪ সালের একই সময়ে যা ছিল ৮ কোটি ১ লাখ ডলার।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। তখন প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ৮ শতাংশ। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট ৫৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন (৫ হাজার ৭৫০ কোটি) মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয় লক্ষ্য নির্ধারণ করছে। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ৫০ বিলিয়নে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইপিবি ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির মধ্যে ৪০ দশমিক ৪৮ বিলিয়নই আশা করছে তৈরি পোশাক খাত থেকে এবং এক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধারণা করছে।
ইপিবি গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় সংশোধন করে। সংশোধনের পর এ অঙ্ক দাঁড়ায় ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারে, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের আয় থেকে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত রপ্তানি পরিসংখ্যানে বড় গরমিল আবিষ্কারের তিন মাস পর ৮ সেপ্টেম্বর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বাণিজ্য পরিসংখ্যান বিষয়ক এক বৈঠকে ইপিবি পরিসংখ্যান সংশোধন করে। গত জুন থেকে সংস্থাটি রপ্তানি তথ্য প্রকাশে বিরত রয়েছে।
অসঙ্গতিগুলো চিহ্নিত করার আগে, ইপিবি বিগত ২০২৩-২৪ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য যথাক্রমে ৫৫ দশমিক ২৮ বিলিয়ন এবং ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়ের পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেছিল। সংস্থাটির নতুন হিসাবে দেখা যায়, গত দুই অর্থবছরে রপ্তানি মোট আয় প্রকৃত আয়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি দেখানো হয়েছিল।