এল ক্লাসিকো হলো এল ক্লাসিকোর মতোই। রোমাঞ্চ, উত্তাপ, উত্তেজনা, আক্রমণ আর গোল উৎসব- কোনো কিছুরই কমতি রইল না। লড়াইটা হলো সেয়ানে সেয়ানে। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলল না। কিন্তু খানিকটা হলেও এগিয়ে থাকল বার্সা। তাই তো রিয়াল মাদ্রিদের হৃদয় ভেঙে শেষ হাসি হাসল কাতালানরাই। সাত গোলের থ্রিলার ৪-৩ গোলে জিতে লা লিগার শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে আরো এগিয়ে গেল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে চার এল ক্লাসিকোতেই হার মানল কোচ কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল (৭৫) থেকে পরিষ্কার ৭ পয়েন্টে এগিয়ে এখন বার্সা (৮২)। পরের তিন ম্যাচের একটিতে জিতলেই স্প্যানিশ লিগ শ্রেষ্ঠত্ব নিজেদের করে ফেলবে লামিনে ইয়ামাল-রাফিনহারা।
তবে শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলা শুরু করেছিল লস ব্লাঙ্কোসরা। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে নাস্তানাবুদ করেছিল স্বাগতিক কাতালানদের। রিয়ালের জার্সিতে শুরুতেই ঝলক দেখান হ্যাটট্রিকম্যান কাইলিয়ান এমবাপ্পে। তার দ্যুতিতে ম্যাচের ১৪ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় অতিথি রিয়াল। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যান বিশ্বকাপ জয়ী ফরাসি এ ফরোয়ার্ড। পাউ কুবারসি ব্যাক পাস দিলে বিপদে পড়ে যান সেজনি। উপায় না দেখে এমবাপ্পেকে ফাউল করে বসেন বার্সা গোলরক্ষক। পেনাল্টির সুযোগটা পেয়ে বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন এমবাপ্পে। পরে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রের কাছ থেকে পাস পেয়ে। এমবাপ্পের নেওয়া রক্ষণচেরা শট আশ্রয় নেয় জালে।
তবে বার্সাও কম যায়নি। নিজেদের এস্তাদিও অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে খেলা বলে কথা। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর পাঁচ মিনিট না যেতেই এক গোল শোধ করে ফেলে ফ্লিকের ক্লাব। ফেরান তোরেসের কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল হেডে জালে বল জড়ান এরিক গার্সিয়া। তার এ গোলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখা শুরু করে ‘কামব্যাক কিং’ বার্সা। মহাকাব্যিক মহারণে প্রথমার্ধেই ৬ গোলের রোমাঞ্চ দেখেছে ফুটবলপ্রেমীরা। ৩২ মিনিটে ইয়ামাল ও ৩৪ মিনিটে রাফিনহা আরো দুটি গোল উপহার দেন।
অবিশ্বাস্য রোমাঞ্চকর এল ক্লাসিকোতে ১০৩ বছর পর এই প্রথম এল ক্লাসিকোতে প্রথম ৩৫ মিনিটের মধ্যে ৫ গোলের দেখা মিলল। ফেরান তোরেসের পাস থেকে ম্যাচে নিজের গোলের দেখা পান ইয়ামাল। দুই মিনিট পর লুকাস ভাসকুয়েজ-কিলিয়ান এমবাপ্পে হাস্যকরভাবে ধাক্কা খেয়ে বলের দখল হারিয়ে ফেলেন। সুযোগটা কাজে লাগান রাফিনহা। ৪৫ মিনিটে জোড়া গোল পূর্ণ করেন রাফিনহা। লুকাস ভাজকুয়েজ বল নিয়ে অলসভাবে এগোচ্ছিলেন। তোরেস তার কাছ থেকে বল কেড়ে নেন। বল পাঠিয়ে দেন রাফিনহার সামনে। দারুণ শটে থিবো কর্তোয়ার চোখ ফাঁকি দেন ব্রাজিলিয়ান এ তারকা।
বিরতির পর রিয়ালকে খেলায় ফেরার রসদ জোগান দেন এমবাপ্পে। ম্যাচের ৭০ মিনিটে ভিনির সহায়তায় সঙ্গে হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করে ফেলেন এ মেগাস্টার। কিন্তু আর খেলায় ফিরতে পারেনি রিয়াল। বরং হারের তেতো স্বাদ হজম করেই মাঠ ছাড়ে তারা। পরে জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারত আরো। ভাগ্য ভালো যে হ্যান্ডবলের কারণে ফারমিন লোপেজের গোল বাতিল গেছে।