শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৫ অপরাহ্ন

নিরপেক্ষতার রূপরেখা নিয়ে সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ

  • সময়: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১০.৩৪ এএম
  • ২৫ জন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে ৩৬ দফা সম্বলিত একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

এসব প্রস্তাবনা নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করবে দলের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের নেতৃত্বে দলের প্রতিনিধি দলটি সিইসির কাছে এই ৩৬ দফা প্রস্তাবনা তুলে দেবে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এই রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয় বলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে বিতর্কিত ও চার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে চায় না বিএনপি:

বিএনপির চূড়ান্ত করা রূপরেখায় উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ‘বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচনগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্বে না রাখা।

এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত চারটি প্রতিষ্ঠানের (ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও ইবনে সিনা) কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো কাজ বা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেয়ার প্রস্তাব করেছে দলটি। বিএনপির অভিমত, এসব কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত করা হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

৩৬ দফার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলো:

নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বিএনপির ৩৬ দফা প্রস্তাবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পেয়েছে-

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা: বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে।

প্রশাসনিক রদবদল: নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসনকে (ডিসি, ইউএনও, এসপি, ওসি, কমিশনার, পুলিশ কমিশনার) সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের (ইলেকশন সার্ভিস) মধ্য থেকে দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি স্থগিত: সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তড়িঘড়ি করে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি নির্বাচন সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে, যা নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

মামলা প্রত্যাহার: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণার পূর্বেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাকর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারি সরকারের আমলে দায়েরকৃত মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল: নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এবং দূতাবাসগুলোতে চুক্তিভিত্তিক সকল নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

অভিযোগ কেন্দ্র চালু: নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণার সাথে সাথে প্রত্যেক জেলার নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে এবং উপজেলা/থানায় অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র চালু করে দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা দাবি:

বিএনপির পর্যবেক্ষণে সরকারের কিছু উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও কার্যক্রমে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল-পদায়ন নিয়ে কিছু উপদেষ্টা পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন এবং গত বছরের পটপরিবর্তনের পর প্রশাসনে জামায়াত-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এ অবস্থায় বিএনপি গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করে তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দল-ঘনিষ্ঠদের বিষয়েও পদক্ষেপ নিতে বলেছে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com