বিশ্ব চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নাম, সৌন্দর্য আর প্রতিভার মিশেলে তৈরি অনন্য প্রতিচ্ছবি—নাম তাঁর মনিকা বেলুচ্চি। ইতালির ছোট্ট শহর চিত্তা দি কাসতেল্লোতে জন্ম নেওয়া এই নারী শুধু একজন অভিনেত্রী নন, নামী ফ্যাশন আইকন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবাদের এক সাহসী কণ্ঠ। তাঁর জীবন যেন এক অসাধারণ সিনেমার স্ক্রিপ্ট, যেখানে প্রেম, বিচ্ছেদ, সাফল্য, আর বিতর্ক হাত ধরাধরি করে এগিয়ে চলেছে।
“সৌন্দর্য একটি শক্তি। তবে, এর জন্য আপনার মস্তিষ্কের প্রয়োজন; কারণ, নয়তো এটি কীভাবে ব্যবহার করবেন, তা জানা যায় না।” – মনিকা বেলুচ্চি
মডেলিং থেকে সিনেমার পথে
১৯৬৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ইতালির এক রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম মনিকা বেলুচ্চির। মা–বাবা সচ্ছল ছিলেন না। ছোটবেলা থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হবেন। কিন্তু অসাধারণ সৌন্দর্য তাঁকে নিয়ে আসে ভিন্ন এক পথে।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্থানীয় ফ্যাশন হাউসের জন্য মডেলিং শুরু করেন। বন্ধুরা বলেছিল, মডেলিং করলে বেশি অর্থ মেলে। তাই রেস্তোরাঁয় ওয়েট্রেসের কাজ ছেড়ে মডেলিংয়ে নেমে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে পড়া শুরু করেও আর শেষ হলো না। পাকাপাকিভাবে জড়িয়ে পড়লেন মডেলিংয়ে।
২৪ বছর বয়সে (১৯৮৮ সাল) চলে আসেন বিশ্বের ফ্যাশনের রাজধানী হিসেবে পরিচিত মিলান শহরে, যেখানে তিনি মডেলিং এজেন্সি এলিট মডেল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। ডলচে অ্যান্ড গ্যাবানার মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের মুখ হয়ে ওঠেন। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই তারকার মডেলিং ক্যারিয়ার এতটাই সফল ছিল যে খুব দ্রুতই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করেন।
“যখন আমি আয়নায় নিজেকে দেখি, তখন আমি দেখি একজন নারী যে তার সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছে।” – মনিকা বেলুচ্চি
মডেলিংয়ের ঝলমলে দুনিয়া থেকে সিনেমার আকর্ষণ তাঁকে টেনে নিয়ে আসে এই জগতে। সালটা ১৯৯০। ইতালীয় টেলিভিশন সিরিজ দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। ১৯৯২ সালে হলিউডে পা রাখেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা পরিচালিত ‘ড্রাকুলা’ সিনেমার মাধ্যমে। যদিও এখানে তাঁর চরিত্রটি খুব বড় ছিল না, তবে এটি তাঁকে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পরিচিতি এনে দেয়।