রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

কারাগারের নতুন নাম ‘কারেকশন সার্ভিস বাংলাদেশ’, হচ্ছে ব্যাপক সংস্কার

  • সময়: মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫, ৬.৪৯ পিএম
  • ১৬২ জন

বাংলাদেশ জেলের নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার কারা সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

আইজি প্রিজন বলেন, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দিদের স্থান সংকুলানের জন্য নতুন করে দুটি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং চারটি জেলা কারাগার চালু করা হয়েছে। এছাড়া অধিকতর সমন্বয়ের জন্য ঢাকা বিভাগকে ভেঙে দুটি বিভাগ করা হয়েছে

তিনি বলেন, কারাগারে লোকবল সংকট রয়েছে। সেই সংকট নিরসনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার ১৮৯৯ নতুন জনবলের অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া আরও ১৫০০ জনবলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কারা অধিদপ্তরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়নের লক্ষ্যে সদর দপ্তরসহ বিভাগীয় সদর দপ্তরসমূহকে ঢেলে সাজানো হয়েছে এবং নতুন জনবল পদায়ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশব্যাপী সব কারাগারকে কারা অধিদপ্তরের নিজস্ব ফাইবার নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য ডিজিটাল এটেনডেন্ট সিস্টেম এবং টিম ট্রেকার্স চালু করা হয়েছে।

কমপ্রিহেনসিভ মোবাইল জ্যামিং সিস্টেম, বডি স্ক্যানার, লাগেজ স্ক্যানার, গ্রাউন্ড সুইপিং মেশিন ও মোবাইল ডিটেক্টর কারা নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এআইনির্ভর সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ডিউটিসমূহে দায়িত্বরতদের বডি ক্যামেরা ব্যবহারের প্রচলন করা হয়েছে। এছাড়া কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বন্দিদের সাক্ষাৎ ও টেলিফোন কলের বিষয়ে আইজি প্রিজন বলেন, বন্দিদের টেলিফোন কল এবং দেখা সাক্ষাতের বিষয়টি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হয়েছে। হটলাইন সেবা (১৬১৯১) চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সেবাগ্রহণকারীরা বন্দি সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য আদান প্রদান করতে পারছে।

বন্দিদের খাবার নিয়ে তিনি বলেন, বন্দিদের খাবারের মেন্যুতে প্রোটিনের পরিমাণ ইতোমধ্যে স্বল্প পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে এবং সকালের নাশতা এবং বিশেষ দিবসের জন্যও খাদ্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

বন্দিদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আইজি প্রিজন বলেন, বন্দিদের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কেরানীগঞ্জে ‘কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের সংশোধনের নিমিত্তে ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ কাউন্সিলিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কারা অধিদপ্তরের চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্তদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি বলেন, অবসরগামী কারারক্ষীদের আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়টি সরকার নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শারীরিকভাবে যোগ্য রাখার স্বার্থে ওয়েট চার্ট সুনির্দিষ্ট করণসহ পিটি-প্যারেড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত দ্রব্যসামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি বলেন, বিগত এক বছরে ৬৯১ জন কারারক্ষী, ১৫০ জন প্রধান কারারক্ষী, ৬৯ জন সর্বপ্রধান কারারক্ষী, ৩০ জন সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর, ৫৫ জন ডেপুটি জেলার ও জেলারকে বিভিন্ন পেশাগত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

মাদকাসক্তির বিষয়ে কঠোরনীতি গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১ বছরে মাদকসেবী ২৯ জন সদস্যকে মাদক বহন/গ্রহণ/সরবরাহে জড়িত থাকার অপরাধে ফৌজদারি মামলায় কারাগারে প্রেরণসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারা সদর দপ্তর নিজস্ব ভোপ টেস্টিং মেশিন সংগ্রহ করেছে।

তিনি আরো বলেন, কারা বিভাগের বিগত এক বছরে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বাধ্যতামূলক অবসর, ৩৪ জনকে চাকরিচ্যুত, ৪৪০ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ ১৭২ জনকে প্রশাসনিক কারণে বিভাগের বাইরে বদলি করা হয়েছে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com