ম্যাচ জিততে চতুর্থ দিন মাত্র ৬৯ রান প্রয়োজন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। সকালের সেশনে দুই উইকেট পড়ে যেতে উশখুশে ভঙ্গিতে শব্দটা শোনা গেল- চোকার্স! তবে সেই শঙ্কা কাটিয়ে ওঠে সেঞ্চুরিয়ান মার্করামের ব্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে নিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের নতুন চ্যাম্পিয়ন এখন দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে ৫ উইকেটের জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক, কোচ ও খেলোয়াড়রা আবেগে মন্থিত হলেন। আনন্দে ভাসলেন, কাঁদলেন।
টেম্বা বাভুমা
শেষ দুদিন আমাদের কাছে বিশেষ মনে হয়েছে। একসময় তো মনে হয়েছে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাতেই আছি। কঠোর প্রস্তুতি আর বিশ্বাস নিয়ে এসেছিলাম। আমরা দারুণ খেলেছি। এটা আমাদের জন্য বিশেষ মুহূর্ত। দল হিসেবে আমরা এর জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম। রাবাদা দারুণ খেলোয়াড়, আশা করি কিছুদিনের মধ্যে সে আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা করে নেবে। এইডেন মার্করাম অবিশ্বাস্য খেলেছে, লোকজ তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু সে তার মতো করে খেলেছে। রাবাদাও দারুণ খেলেছে। আমরা যেভাবে ফাইনালে এসেছি, তা নিয়ে অনেক দ্বিধা আছে। এই জয় সব দ্বিধা দূর করে দিয়েছে। এটা আমাদের জাতি হিসেবে উদযাপনের সুযোগ করে দিয়েছে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে। আমরা এক হয়ে উদযাপন করব।
এইডেন মার্করাম
অনেক গুরুত্বপূর্ণ রান করতে পারিনি। প্রথম ইনিংসে ডাকের পর এভাবে ইনিংস খেলাটা দারুণ ছিল। সময়ের দরকার ছিল এবং তাতে রান এসেছে। যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবে কাজ হয়েছে। লর্ডসে সব টেস্ট ক্রিকেটার খেলতে চায়। এখানে ফাইনাল খেলা দারুণ ব্যাপার। অনেক প্রোটিয়া সমর্থকরা এসেছে, মনে হয়েছিল ঘরের মাঠে খেলছি। এটা আমাদের জন্য বিশেষ একটা দিন। যখন উইকেট ও দারুণ বোলিং আক্রমণের দিকে তাকাবেন, তখন কিছু বল খেলে এখান থেকেই রান করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। নাথান লায়ন দারুণ বোলার। সে অনেক স্লোজিং করেছে এবং খেলা যদি পাঁচ দিনে গড়াত তাহলে বল স্পিন করত। তাতে এটা (স্লোজিং) অনেক কার্যকর হতো। সত্যি বলতে তার (বাভুমা) কাছ থেকে অনেক কিছু এসেছে। সে সামনে থেকে আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছে। ইনজুরির পর গতকাল (পরশু) সে মাঠ ছাড়তে চায়নি। সে রান করতে ভালোবাসে। দারুণ একটা ইনিংস খেলেছে। এর জন্য সবাই তাকে মনে রাখবে।
কাগিসো রাবাদা
ভাষায় প্রকাশ করার মতো পরিস্থিতি নেই। দারুণ খুশি। যেভাবে পরিকল্পনা এবং পরিশ্রম করেছি সেটা কাজে লেগেছে। আমরা এটার যোগ্য। অনেকে বলে আমরা কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হইনি, এটা বাজে কথা। আমরা এই সময়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ আমাদের সমর্থন দেওয়ায়। মনে হয়েছে চার দিন ঘরের মাঠে খেলেছি।
সুকরি কোনার্ড
আমার অবস্থা কেশের (কেশব মহারাজ) চেয়েও খারাপ। ছেলেদের জন্য আমি গর্বিত। এটা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। আমরা সেরা ব্যাটিং কন্ডিশন পেয়েছি। ২৮০ করা সব সময় কঠিন কাজ। কিন্তু এইডেন আর টেম্বা যেভাবে উইকেটে থেকেছে সেটা দারুণ। আমি একজন যে কিনা বলেছিলাম, টেম্বার (ইনজুরির পর) আর ব্যাটিং উচিত হবে না। কিন্তু তাদের (মার্করাম-বাভুমা) জুটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তারা কোচের চেয়েও ভালো জানে কী করতে হবে।
মার্কো ইয়ানসেন
জানি না কী বলব। সেখানে (ড্রেসিংরুম) বসে প্রার্থনা করছিলাম। সৌভাগ্যবশত দারুণ কাজ করেছি আমরা। ড্রেসিংরুমে সবাই সবার নার্ভ ধরে রেখেছিল। বেশির ভাগই চুপচাপ ছিল। কিন্তু গ্যালারিতে দর্শকরা প্রত্যেকটা রানে চিয়ার্স করছিল, তাদের চুপচাপ হতে বলতে পারছিলাম না। এতটাই চিন্তিত ছিলাম আমরা। মার্করাম অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছে। সে আর টেম্বা আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে।