উইকেট ব্যাটিং সহায়ক, দুইশ রানের লক্ষ্য পার হওয়া কঠিন কিছু ছিল না। অথচ সেটাকে কঠিন করেই হারল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৭ রানের বড় পরাজয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।
বুধবার (২৮ মে) লাহোরে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান তোলে পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে বড় ইনিংসের অভাবে ১৯.২ ওভারে ১৬৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলীর শিকার হয়ে ফেরেন ইমন। ৫ বল খেলে ৪ রান করেন এই ব্যাটার। ইমন ফিরলেও তার সতীর্থ তানজীদ সাহসী ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। ছয়-চারের মারে রানের গতি বাড়ান এই ব্যাটার। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
হাসান আলীর শিকার হয়ে ফেরেন তানজীদও। তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ৩১ রান। ৩টি ছয়ে ও ২টি চারে ইনিংস সাজান তানজীদ। পাওয়ার প্লে থেকে আসে ২ উইকেটে ৪৫ রান। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন হৃদয়।
৪০ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন লিটন-হৃদয়। দুজনের ব্যাটে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ফিফটি থেকে দুই রান দূরে লিটন আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ৩০ বলে ৪৮ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগের বলে শাদাবকে ছয় হাঁকান লিটন। তাতে ১১.৫ ওভারে বাংলাদেশ শতরান করে।
পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন হৃদয়ও। ২২ বলে ১৭ রান করে দলকে উলটো চাপে ফেলে দিলেন এই ব্যাটার। ক্রিজে জাকের আলীর সঙ্গী হন শামীম হোসেন। এরপর হুট করেই ১০০/২ থেকে ১০৮/৫ এর দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ৯ বলের মধ্যে পড়েছে ৩ উইকেট। আগা সালমান ফেরান শামীম হোসেনকে।
এরপর জাকের আলী ও রিশাদ হোসেন মিলে যোগ করেছেন ১০ রান। তবে কেউ ইনিংস বড় করতে পারেননি। জাকেরের ২০ বলে ৩৬ রানের ইনিংস মান বাঁচিয়েছে কেবল। বাকিদের রানের খাতা সিঙ্গেল ডিজিটেই থেমেছে।
এর আগে, টস জিতে ব্যাটিং নেয় পাকিস্তান। শুরুতেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন শেখ মাহেদী। তার করা ম্যাচের তৃতীয় বলেই পাকিস্তান ওপেনার সাইম আইয়ুব আউট। ব্যাটের কানায় বল লেগে সহজ ক্যাচ উঠলো। ফলো থ্রুতে ক্যাচ ধরলেন মাহেদি। প্রথম বলেই শূন্য রানে আইয়ুব আউট।
পরের ওভারেই শরিফুল বাংলাদেশ শিবিরে হাসি নিয়ে এলেন। আরেক ইনফর্ম ওপেনার ফখর জামান লেগ বিফোরের ফাঁদে। ৪ বল খেলে মাত্র ১ রান নিয়ে ফিরলেন জামান। প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারানো পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে রান তখন মাত্র ৫।
শুরুতেই চড়ে বসার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। তবে দুই মিডলঅর্ডার মোহাম্মদ হারিস ও অধিনায়ক সালমান আগা আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট চালান। বিশেষ করে মোহাম্মদ হারিস একটু বেশিই মারমুখী ছিলেন।
নিজের প্রথম ১২ বলে তার রান ছিল ২২। ৩ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় আসে তার এই রান। প্রথম ওভারে ৪ রানে ১ উইকেট পাওয়া শরিফুল তার দ্বিতীয় ওভারে খরচা গুনেন ১৬ রানের। ৫ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪৩ রান।
এরপর আর সুযোগই পায়নি বাংলাদেশ। অধিনায়ক আগার ৫৬, শাদাব খানের ৪৮, হাসান নাওয়াজের ৪৪ এবং হারিসের ঝড়ো ৩১ রানে ভরে করে দুইশ ছাড়িয়ে যায় পাকিস্তান।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন শরিফুল। ১টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ, শেখ মাহেদী, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব ও শামীম হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ২০১/৭ (সালমান ৫৬, নাওয়াজ ৪৪, শাদাব ৪৮; শরিফুল ৩-০-৩২-২, হাসান ৩-০-২৪-১)
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ১৬৪ (তানজিদ ৩১, লিটন ৪৮, জাকের ৩৬; হাসান ৩.২-০-৩০-৫, শাদাব ৪-০-২৭-২)
ফল: পাকিস্তার ৩৭ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ : শাদাব খান।