ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার চায় দেশের সব রাজনৈতিক দল। দৈনিক আমার দেশকে এসব দলের নেতারা বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে যত হত্যা, গুম, অপহরণ ও নির্যাতন হয়েছে, এর দায় তাকে নিতেই হবে। এছাড়া জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকাসহ সারা দেশে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, তার দায় শেখ হাসিনা এড়াতে পারেন না।
তার নির্দেশেই এ গণহত্যা হয়েছে। সীমাহীন অর্থপাচার, অর্থ লুটপাট ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগকে আজ্ঞাবহ করে দেশের মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার শেষ আশ্রয়স্থলকেও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র শাসনে মানুষের প্রতিনিধি বাছাইয়ের নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূলেই আঘাত হানা হয়েছে- যা রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার নামান্তর।
রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচারটা কিন্তু প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধের বিচার নয়। বিচার না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতেই থাকবে। সুতরাং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করে কেউ যাতে পার পেতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য বিচার হওয়াটা দরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) এক সাক্ষাৎকারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ‘নিষ্ঠুরতার’ বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে বাংলাদেশের মানুষের শান্তি হবে না। যে নৃশংসতা তিনি দেখিয়েছেন, তার সমাধান বিচারের মাধ্যমেই হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে আইনগত প্রক্রিয়া জোরেশোরে চলছে। তবে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য একটা প্রয়োজনীয় সময়ের ব্যাপার আছে। আমরা বারবার বলছি, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনতে চাই। আশা করছি তাকে দ্রুত দেশে ফেরত এনে বিচারের সম্মুখীন করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গুলি চালিয়ে হত্যা, গুম, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে এখন পর্যন্ত ২৫০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যামামলার সংখ্যা ২১৩টি।
দেশের প্রচলিত ফৌজদারি আইনে দায়ের হওয়া এসব মামলার পাশাপাশি গুম, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রত্যক্ষ অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করা হয়। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে এবং এ পরোয়ানা তামিল করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা জারি করে।
ট্রাইব্যুনালের এ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করার উদ্যোগ নেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই অংশ হিসেবে আইন মন্ত্রণালয়ের অভিমত নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভারবাল) পাঠিয়েছে দিল্লির কাছে।
ভবিষ্যতে এ ধারা বন্ধ করতেই শেখ হাসিনার বিচার হওয়া উচিত : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথমত মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা বলতে আর কিছু নেই। বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোটের নামে যা হয়েছে, তা সুখকর নয়। বিচার বিভাগকে আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যক্তিগত পেটোয়া বাহিনীতে রূপান্তর করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মদতে গোপন নির্যাতন সেল আয়নাঘর তৈরি করেছে। হত্যা, গুম করা হয়েছে। উন্নয়নের নামে চলেছে লুটপাট, অর্থপাচার। এসব দায় পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাছাড়া জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের নামে যে গণহত্যা করা হয়েছে, তার জন্য সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনাই দায়ী। তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য এ সবকিছু করেছেন। এসব কারণে তার বিচার হওয়া উচিত। কেননা, ভবিষ্যতে যেন এ ধারা আর ফিরে না আসে, তা নিশ্চিত করার জন্য তার (হাসিনার) বিচার হওয়া প্রয়োজন।
শেখ হাসিনার বিচার চাওয়ার কারণ অনেক লম্বা : ডা. শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই চাই। কিন্তু এই বিচার চাওয়ার কারণ তো অনেক লম্বা।
তিনি বলেন, তিনি নিজের পরিবার, গোষ্ঠী ও দলকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতি করেছেন। তিনি গুম, খুনি-সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিয়েছেন, নিজের পরিকল্পনায় হাজারো মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করে আবার তাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন, আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে হত্যা করেছেন।
তিনি বলেন, এছাড়া ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা, পিলখানায় বিডিআর কিলিংয়ের পরিকল্পনাকারী এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে অবশ্যই শেখ হাসিনার বিচার হতে হবে।
অপরাধের বিচার না হলে রাষ্ট্রের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে : আ স ম রব
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে বলেন, গণহত্যায় জড়িত থাকা, রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে নৈতিকভাবে ধ্বংস করা, গণতন্ত্র হত্যা করা, উন্নয়নের নামে লুণ্ঠন ও গুম-হত্যা, আয়নাঘরের নির্দেশদাতা হিসেবে অবশ্যই তার বিচার হতে হবে। রাষ্ট্রে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
অপরাধীকে আইনের আশ্রয়ে নিতে না পারলে সমাজ অপরাধপ্রবণ হয়ে পড়বে এবং অপরাধের বিচার না হলে রাষ্ট্রের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে।
হাসিনার শাসনামলে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে : কর্নেল অলি
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বীর বিক্রম বলেছেন, পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, নির্বাচনি ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। তার আমলে দেশে ব্যাপক গুম, খুন হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতাদের গুম করে হত্যা করা হয়েছে- যা আজ স্পষ্ট। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনের সময় যে গণহত্যা হয়েছে, তা তো শেখ হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে। অতএব, শেখ হাসিনার বিচার আমরা চাই।
শেখ হাসিনাসহ সব অন্যায়কারীর বিচার হওয়া উচিত : মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম শেখ হাসিনার শাসনামলে নানা অপরাধের জন্য তার বিচার প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করি সব অন্যায়েরই বিচার হওয়া উচিত। তার আমলে যারা নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল, ইনক্লুডিং শেখ হাসিনা, সবাইকে বিচারের আওতায় আনা উচিত।
তিনি বলেন, এর আগেও যারা সরকারে ছিল, তখনও যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সেসবেরও বিচার হওয়া উচিত। বাংলাদেশের ৫৩ বছরে সামরিক শাসন ছিল, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় ছিল। তখনকার সংঘটিত অপরাধগুলোর বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করি।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা- এসব অপরাধ যাতে আর না ঘটে, সে ধরনের সমাজব্যবস্থা তৈরি করতে হবে আমাদের।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা, গুম, খুন ও লুটপাটের জন্য হাসিনার বিচার চাই : চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা, গুম, খুন ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে।
সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই শেখ হাসিনার বিচার হওয়া প্রয়োজন : সাইফুল হক
গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, প্রথমত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার ইচ্ছে বা নির্দেশনা ছাড়া এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়নি। এটা মোটামুটি পরিষ্কার। সুতরাং প্রাইম রেসপনসিবিলিটি হিসেবে তাকে বিচারের আওতায় আনার প্রশ্ন আছে।
তিনি বলেন, এই যে ১৫-১৬ বছর ধরে চলা গুম, খুন, রাজনৈতিক নিপীড়ন- এরও কিন্তু সব দায়দায়িত্ব সাবেক প্রধানমন্ত্রীর। আর যে সীমাহীন অর্থপাচার- যেটা ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যম আংশিক প্রকাশ করেছে- এর দায়দায়িত্বও তার ক্ষেত্রে আছে।
তিনি বলেন, তার বিচারটা কিন্তু প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধের বিচার নয়। এটা হত্যাকাণ্ড হয়েছে, অপরাধ হয়েছে, তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য শেখ হাসিনাসহ যারা এসবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তার মন্ত্রী, এমপি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে বিচারের আওতায় আনা দরকার। এ বিচারগুলো না হলে ভবিষ্যতে বিচারহীনতার সংস্কৃতিটা চলতেই থাকবে। এর ফলে পরবর্তী সরকারগুলোও একই ধারায় যেতে থাকবে। সুতরাং সমাজে ন্যায়বিচার এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করে কেউ যাতে পার না পায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্যই বিচারটা হওয়া দরকার।
শেখ হাসিনার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এখন জাতীয় দাবি
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মঞ্জু বলেছেন, শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারের একটি রোল মডেল। তার সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসন ও লুটপাট পৃথিবীতে অনাগতকাল ধরে ‘কালো অধ্যায়’ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে; তাই শুধু বাংলাদেশের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের জন্য নয়, আমি মনে করি পৃথিবীতে ফ্যাসিবাদী মানসিকতার সব শাসকের শিক্ষার জন্যই শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের যথাযথ বিচার করা প্রয়োজন। তাকে বিচারের মুখামুখি করা এই রাষ্ট্র ও মানবতার দায়। ভবিষ্যতে যেন কেউ তার মতো নিষ্ঠুর শাসন কায়েম করতে না পারে, সেজন্য তার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এখন জাতীয় দাবি।
ফ্যাসিবাদের মূল হোতার বিচার না হলে শাহাদাতবরণকারীদের আত্মা শান্তি পাবে না : নুরুল হক নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতাকে দমন করার জন্য হিংস্রভাবে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করেছে শেখ হাসিনা। তার অবশ্যই বিচার হতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটেছে। এই ফ্যাসিবাদের মূল হোতার বিচার না হলে আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারীদের আত্মা শান্তি পাবে না এবং আন্দোলনে আহত ও অংশগ্রহণকারীদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকে শেখ হাসিনা দৈত্যদানবে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এ রকম দানবে পরিণত হতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য তার বিচার হওয়া উচিত।
বিচারটা হতে হবে দৃষ্টান্তমূলক, যেন আর কেউ এসব না করে : মোস্তফা জামাল হায়দার
১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, শেখ হাসিনা তার শাসনামলে খুন, গুম, নির্যাতনসহ নানা অপরাধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ যে জন্য হয়েছিল, সেই গণতান্ত্রিক কাঠামো একেবারে শেষ করে দিয়েছে। এজন্য আমরা তার বিচার চাই। এই বিচারটা হতে হবে দৃষ্টান্তমূলক, যেন ভবিষ্যতে এরকম আর কেউ না করতে পারে।
দেশের সবাই হাসিনার বিচার চায় : আহমদ আবদুল কাদের
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই চাই। গুম, হত্যা-নির্যাতনসহ হেন অপরাধ নেই যা তিনি করেননি। অপরাধের তালিকা করলে তিনি এক নম্বরে থাকবেন। এজন্য দেশের সব মানুষই তার বিচার চায়।
শেখ হাসিনার বিচার না হলে ভবিষ্যতে আরও ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে : মামুনুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার হোক- তা আমরা চেয়েই আসছি। কেননা, তার শাসনামলে রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম, খুন, নির্যাতন করে দেশে একধরনের ভীতির রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার একটাই উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতায় টিকে থাকা। এসব কারণে তার যদি বিচার না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এরকম ফ্যাসিবাদের আবারও জন্ম হতে পারে। ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়তে শেখ হাসিনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
সবকিছুই শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে : জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে একটা ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করা, ক্ষমতার অপব্যবহার করা, গুম, খুনসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর অত্যাচার, ভয়ঙ্করতম লুণ্ঠন-লুটপাট এবং অর্থপাচার, সর্বশেষ জুলাই-আগস্টে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা চালানো হয়েছে। ১৬০০’র ওপরে আমাদের ছাত্র-জনতা-শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। সবকিছুই শেখ হাসিনার নির্দেশে, তার নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে হয়েছে। কাজেই যারা হুকুম দিয়েছেন এবং যাদের হুকুমে বাস্তবায়ন হয়েছে, তাদের সবাইকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে এবং বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।