গ্যাসের সংস্থান নেই, সহসা সরবরাহের নিশ্চয়তাও নেই, তবু বৈদেশিক ঋণে নির্মাণ করা হয়েছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। রাষ্ট্রীয় খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে বসিয়ে রেখে পরে স্থাপিত বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে গ্যাস।
ফলে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন পর্যায়ে গিয়েও এখন গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে। আগামী তিন বছরেও কেন্দ্রটির উৎপাদনে যাওয়া অনিশ্চিত। বাড়ছে ঋণের বোঝা। বিপাকে পড়েছে সরকার। অবিশ্বাস্য এ চিত্র সরকারি মালিকানার রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্রের।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (নওপাজেকো) অধীনে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পতিত শেখ হাসিনা সরকারের বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট ও নৈরাজ্যের অন্যতম প্রতীক। সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকায় নির্মিত কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বসিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছে আরেক রাষ্ট্রীয় সংস্থা পেট্রোবাংলা।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যেতে না পারায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে এখন মহাবিপাকে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ডিসেম্বর থেকে সুদসহ কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ শুরু হওয়ায় চাপে পড়েছে নওপাজেকো। বিদুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র আমার দেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্প গ্রহণের সময় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে রূপসায় গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা না করে ২০১৯ সালে বেসরকারিভাবে গড়ে তোলা প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয় বিগত সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্তের ফলে এডিবির ৫০০ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা) ঋণের দেশবাসীর জন্য এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি খাতের এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে বিপিডিবকে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রাখার এমন সিদ্ধান্তকে দেশের জন্য আত্মঘাতী বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। আর অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা জানান, শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে দেশের অর্থ লোপাট হয়েছে। স্বজনপ্রীতি ও কিছু মানুষকে সুবিধা দিতে অপ্রয়োজনে বেসরকারি খাতে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওইগুলো প্রাধান্য দিতে গিয়ে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ভারতের স্বার্থে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প
বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর খুলনার রূপসায় ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পের জন্য বিসিআইসির আওতাধীন খুলনা নিউজ প্রিন্ট মিলস লি.-এর পরিত্যক্ত আবাসিক এলাকা থেকে জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়।
২০১৫ সালের ১২ আগস্ট বিদ্যুৎ বিভাগ প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টি শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশে সরকার নীতিগতভাবে অনুমোদন করে। একই বছর ২ নভেম্বর এ প্রকল্পের অনুকূলে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ঋণ প্রাপ্তির বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য পরিকল্পনা কমিশন পিডিপিপি অনুমোদন দেয়।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, খুলনায় এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প নেওয়ার আগে ২০১৩ সালে ভারতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এইচ এনার্জি পশ্চিমবঙ্গের দীঘায় তাদের এলএনজি টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে রিগ্যাসিফাইড এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাব দেয়। মূলত এ প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে রূপসায় ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয় পতিত আওয়ামী লীগ সরকার।
এলএনজি সরবরাহের জন্য নওপাজেকো ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এইচ এনার্জির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে। এরই মধ্যে ভারতে এইচ এনার্জির প্রস্তাবিত গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের বিষয়ে বিরোধ শুরু হলে তা সালিশের পর্যায়ে গিয়ে গড়ায়। এতে রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এইচ এনার্জির কাছ থেকে এলএনজি প্রাপ্তির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
এডিবির ৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ পেতে ভিন্ন কৌশল
পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, ভারতের এইচ এনার্জির কাছ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি হিসেবে রিগ্যাসিফাইড এলএনজি প্রাপ্তির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও সরকার ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প বহাল রাখে। বিদ্যুৎ বিভাগ পেট্রোবাংলার কাছে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা চায়।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পেট্রোবাংলা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়। পরে জ্বালানি বিভাগ ২০১৭ সালের ৬ জুলাই ইআরডির মাধ্যমে এডিবিতে গ্যাস সরবরাহের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানিয়ে পত্র পাঠানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোবাংলার আওতাধীন সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে নওপাজেকোর ২০১৭ সালে গ্যাস সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নির্মাণের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গ্যাসের নিশ্চয়তা পাওয়ার পর ২০১৮ সালের ২২ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) রূপসার এ ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। একনেকে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ২ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা আর বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা।
একনেকে অনুমোদন পেয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ ২০১৮ সালের ২ আগস্ট এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি করে। বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণের টাকায় এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হলেও পেট্রোবাংলা চুক্তি অনুযায়ী এতে গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে বেসরকারি খাতে গ্যাস
পেট্রোবাংলার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, সরকারের নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস দিতে না পারলেও মেঘনাঘাটে বেসরকারি খাতের সামিট গ্রুপের ৫৮৩ মেগাওয়াট, ভারতের রিলায়েন্স গ্রুপের ৭১৮ মেগাওয়াট ও ইউনিক গ্রুপের ৫৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে পেট্রোবাংলা গ্যাস সরবরাহ করছে।
এরই মধ্যে সামিট ও ইউনিক গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি উৎপাদনে এসেছে। এ ছাড়া রিলায়েন্স গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কমিশনিং (উৎপাদনের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা) পর্যায়ে রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়ার আড়াই বছর পরে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসরকারি এ তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের অঙ্গীকার করা হয়েছিল। এ ৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে গ্যাস সরবরাহ করায় রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
২০১৯ সাল থেকে বেশ কয়েকবার পেট্রোবাংলায় চিঠি দিয়ে ও বিদ্যুৎ সচিবের সভাপতিত্বে প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির বিভিন্ন সভায় রূপসা প্রকল্পে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (নওপাজেকো) অনুরোধ জানায়। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও জ্বালানি বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে কোন এ বিষয়ে এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিকল্প উৎস থেকে গ্যাস আনার চেষ্টাও ব্যর্থ
নওপাজেকো সূত্র জানিয়েছে, এ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালী জেলার পায়রাতে একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনসহ খুলনা পর্যন্ত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এ টার্মিনাল হতে ২০২৪ সাল নাগাদ গ্যাস সরবরাহ শুরু করার পরিকল্পনাও ছিল সরকারের। পরে তৎকালীন হাসিনা সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌফিক এলাহী চৌধুরীর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে এ উদ্যোগও ভেস্তে যায়।
যদিও ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি বিশেষ আইনে পেট্রোবাংলার মাধ্যমে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এ মহল আবারও ভারত থেকে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেয়। ফলে পায়রা এলএনজি টার্মিনাল বাস্তবায়ন কাজ আর এগোয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ আইনে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্তের কারণে পায়রার ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল এবং এ ধরনের অন্যান্য সব উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ফৌজদারি অপরাধে শাস্তি দাবি
ভারতকে একতরফা সুবিধা দিতে দেশের প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও দেশের ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শাসসুল আলম আমার দেশকে জানান, একটি বিশেষ মহলকে বিশেষ সুবিধা দিতে বিগত সরকার এ আত্মঘাতী প্রকল্প নিয়েছিল।
ওই সময় এর ব্যয় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা হলেও এখন এর দায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে গিয়ে পৌঁছেছে। এর জন্য দায়ী বিগত সরকারের নীতি নির্ধারকরা, কারণ তারা সবাই ফৌজদারি অপরাধ করেছে। জনগণকে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণের ফাঁদে ফেলে দিয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো কার্যকর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
অধ্যাপক শামসুল আলম আরও বলেন, এ প্রকল্পটির জন্য যে তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী সবচেয়ে বেশি দায়ী তাকে জেলখানায় আরামে রেখেছে এ সরকার। তার বিরুদ্ধে এ গুরুতর অন্যায়ের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগও করেনি। এ বিষয়টি অত্যন্ত আতঙ্কের। এভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারে না।
এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাঁচানোর জন্য সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে। ভোলা থেকে গ্যাস এনে হলেও এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জরুরি ভিত্তিতে চালু করতে হবে। তা না হলে জনগণের ঘাঁড়ে ঋণের বোঝা আরও বাড়তে থাকবে।
হাসিনার সরকারের উদ্যোগ ছিল আত্মঘাতী
রূপসায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি বিগত শেখ হাসিনার সরকার দেশের স্বার্থে নয়, ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতেই নিয়ে নিয়েছিলেন বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যমান জ্বালানি সংকট দূর করার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন তিনি। পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, অনিয়মের মহোৎসব হয়েছে। স্বজনপ্রীতি ও কিছু মানুষকে সুবিধা দিতে অপ্রয়োজনে বেসরকারি খাতে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, বিদ্যুৎ কোম্পানিকে টাকাও দিতে পারি না, আবার বিদেশি হলে ডলার দিতে পারি না। গ্যাস আমদানির জন্য ডলার দিতে পারছি না। বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার জন্য কিন্তু বিদ্যুতের ট্যারিফ বারবার বাড়ানো হয়েছে।
দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, কার স্বার্থে এখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলো? কার স্বার্থে ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হলো? মানুষ তো কোনো উপকার পারছে না। এখন আমাদের এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাঁচিয়ে রাখতে হলেও গ্যাস সরবরাহের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজতে হচ্ছে।