গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রোববার রাত ১০টার দিকে দলীয়প্রধানের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তার রাজধানীর গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে বেরিয়ে এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। লন্ডন যাত্রার সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ার মধ্যে রাত ৯টায় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করতে যান।
খালেদা জিয়ার নির্দেশনা কিংবা বার্তা কী জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ম্যাডাম নির্দেশনা দিয়েছেন যে, এক সঙ্গে কাজ করো, জনগণের পক্ষে কাজ করো, গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করো।’
মির্জা ফখরুল লন্ডন যাত্রার দিনক্ষণ আনুষ্ঠানিভাবে জানিয়ে বলেন, ‘আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী, জনগনের সবচাইতে আদরের নেত্রী যিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষহীন তিনি চিকিৎসার জন্যে আগামী ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। সেই কারণে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সকল সদস্য উনার কাছে এসেছিলাম শুভেচ্ছা জানাতে।’
তিনি বলেন, সেই সঙ্গে আমরা তার সঙ্গে আলাপ করেছি, কথা বলেছি। পরম করুনাময় আল্লাহতালার কাছে এই দোয়া করেছি- আল্লাহ তাকে সুস্থ করে যেন আবার আমাদের মাঝে, দেশের মানুষের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। গণতন্ত্রের জন্য আমাদের যে সংগ্রাম চলছে সেই সংগ্রামে তিনি যেন নেতৃত্ব দিয়ে তা সফল করতে পারেন। বাংলাদেশের মানুষেরও সেই প্রত্যাশা।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দোয়া করছি তার(খালেদা জিয়ার) যাত্রা যেন সফল হয় এবং তিনি সুচিকিৎসা নিয়ে আবার ফিরে আসতে পারেন।”
কবে নাগাদ বেগম জিয়া ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এটা তো চিকিৎসকরা বলতে পারেন। আমরা তো বলতে পারি না। আমরা আশা করি উনি চিকিৎসা শেষে খুব শিগগিই দেশে ফিরে আসবেন।”
উল্লেখ্য, কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’ বিমানে মঙ্গলবার রাতে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। লন্ডন যাত্রার আগে গতকাল রাত ৯টায় ‘ফিরোজায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হেসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও এজেডএম জাহিদ হোসেন।
এর আগে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে দেখা করেন।
লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগছেন বেগম খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্যই লন্ডনে যাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপিটালের মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি কেয়ার ইউনিট খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপারেন্টের চিকিৎসা করার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে তার যাবতীয় চিকিৎসার কাগজপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্টসমূহ সেখানে পাঠানো হয়েছে।