বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা কোনো চক্রান্তের কাছে মাথানত করবো না।
শনিবার ঠাকুরগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে এক সমাবেশে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলে।
গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের রাজনীতি-গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করেছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তারা কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীকে হত্যা করেছে। এই আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তারা জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় এবং তারা দেশের সবকিছুকে ধ্বংস করে দেয়। আজ তোমাদের আন্দোলন, একই সঙ্গে জনগণের আন্দোলন—সব মিলিয়ে হাসিনা যখন দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, তখন আমাদের সামনে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। আজ যেটা প্রয়োজন, তা হচ্ছে ঐক্য। বিশেষ করে জনগণের ঐক্যের সঙ্গে ছাত্রদের ঐক্য।’
বিগত বছরগুলোতে ছাত্ররা অনেক ত্যাগ শিকার করেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তোমরা অনেক মামলা-মোকদ্দমার শিকার হয়েছো। আজ আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হতে পেরেছি। প্রিয় বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তোমাদের এই ছাত্রদল গঠন করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। পরে ৭ নভেম্বর জনগণ তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল। এরপর তিনি মাত্র চার বছর বেঁচে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই চার বছরেই বাংলাদেশের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি একদিকে রাজনীতি ও অন্যদিকে অর্থনীতির মৌলিক পরিবর্তন ঘটান।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালের আগে এদেশে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। তারা তখনও একইভাবে সারাদেশে লুটপাট, ষড়যন্ত্র, হত্যা, গুম করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। তাদের দুঃশাসনের কারণে বাংলাদেশে চরম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সবশেষে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই একদলীয় শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এসেছিলেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। শিক্ষাকে গণমুখী করার জন্য, জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পড়াশোনা করার পরামর্শ দিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তোমাদের উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই, সবার আগে পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। সেইসঙ্গে দেশের রাজনৈতিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জাতীয়তাবাদী দলের যে দর্শন, তা জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা সব সময় এদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাইবো। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে চাইবো। মানুষের অধিকারকে রক্ষা করতে চাইবো। সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন রাখবো। আজকে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সেই চক্রান্তের কাছে আমরা মাথানত করবো না।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েসের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহের, আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, আনসারুল হক ও পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম।