শহীদ কর্নেল মুজিবুল হকের স্ত্রী মেহরিম ফেরদৌসি বলেছেন, পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নৃশংসভাবে খুন হওয়ার নেপথ্যে বিডিআর বিদ্রোহ নয় বরং বিষয়টি পরিকল্পিত ছিল। এই হত্যাকাণ্ডকে বিডিআর বিদ্রোহ বলবেন না। বিদ্রোহ এ রকম হয় না। এসব কিছুই পূর্বপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পিলখানা গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে অভিযোগ জমা দেওয়ার পর তিনি এসব কথা বলেন।
ফেরদৌসি বলেন, ওই দিন প্ল্যান করে মেরে পোড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের ঘর থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বাচ্চাদের বুট দিয়ে লাথি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের সঙ্গে ওই দিন (২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি) কী করা হয়েছে, তা আপনারা জানেন না।
তিনি বলেন, এটাকে (পিলখানায় হত্যাকাণ্ড) পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলবেন? এর তদন্ত করলেই সত্যতা বের হয়ে আসবে এবং এটি জনসম্মুখে করতে হবে। আমরা আজও জানি না কিংবা আমাদের সন্তানরাও জানে না কী কারণে উনাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। তাদেরকে হত্যা করার জন্য কোনো একটি কারণ তো থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় অনেক সাংবাদিক শহীদদের দুর্নীতির অপবাদ দিয়েছে। যা আমাদের জন্য লজ্জার। অথচ তারা সৎ কর্মকর্তা ছিলেন। যদি দুর্নীতি করে থাকে তাহলে সেগুলোর নথিপত্র তো থাকবে। এখন আপনারা এগুরো বের করেন।
দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার জন্যই এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঘটনা দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার একটি পরিকল্পনা ছিল। আমাদের দেশের তুখোড় কিছু অফিসারদের মেরে তারা শান্ত হয়নি বরং পরিবারের সদস্য ও আশপাশে জড়িত অনেক সাহসীদেরও হত্যা করেছে।
তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবিও জানান তিনি।
এ সময় তৎকালীন বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ, শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে সাকিব রহমানসহ ১৫ থেকে ২০ জন শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।