বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) পরিচালনা পর্ষদ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংক থেকে ঋণের নামে লুটপাটের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
রোববার দুদক বিষয়টি পর্যালোচনা করেছে। তারা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে। এর অংশ হিসাবে দুদক তাদেও নিজস্ব ধারায় এটি অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ব্যাংক থেকেও তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন। তার ও তার পরিবারের সদস্যের নামে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আর আমীরাতসহ বিভিন্ন দেশে অঢেল সম্পত্তির তথ্য মিলেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ২০১৮ সালে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ব্যাংকটির পূর্ববর্তী পর্ষদের সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন এবং নিজ পরিবার ও সহযোগীদে ব্যাংকের পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করেন। স্ত্রী রুখমিলা জামানকে চেয়ারম্যান এবং ভাই আনিসুজ্জামানকে নির্বাহী কমিটির প্রধান নিযুক্ত করেন। এর মাধ্যমে ব্যাংকটিতে তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে শুরু হয় লুটপাট।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির আগের পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নিয়ে আগের পরিচালকদের অনিয়মের অনুসন্ধান শুরু করে। একই সঙ্গে ব্যাংকটিতে লুটপাটের তথ্য পেতে ফরেনসিক অডিট করা হয়। সম্প্রতি অডিট প্রতিবেদন পর্ষদের হাতে এসেছে। ওই প্রতিবেদেনর তথ্য উপাত্ত এখন দুদককে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অর্থ লুট করতে জালিয়াতি করে হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন কওে আগের পর্ষদ। নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট জেনেক্স ইনফোসিস, জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এ অ্যান্ড পি ভেঞ্চার এবং এডব্লিউআর রিয়েল এস্টেটের নামে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়। এসব ঋণ দ্রুত ছাড়ও করা হয়। যার বড় অংশই দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।