সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ন

কৃষকের ৩০ টাকার বেগুন ভোক্তা যেভাবে ক্রয় করছনে ১৫০ টাকায়

  • সময়: বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪, ৯.১৭ এএম
  • ২৫ জন

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও বাজারে পণ্যমূল্য পরিস্থিতি সর্বকালের রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে সব পণ্যের দামই বাড়ছে হুহু করে। তাদের থাবা থেকে বাদ যায়নি সবজিও। রাজধানীর খুচরা বাজারে বেশির ভাগ সবজির কেজি ১০০ টাকার ওপরে। আবার কিছু ৩০০ টাকাও ছাড়িয়ে গেছে। পরিস্থিতি এমন-চার থেকে পাঁচ হাত বদলে কৃষকের ৩০ টাকা কেজির বেগুন ভোক্তা ১৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যান্য সবজিতেও একই চিত্র। আর এই হাতবদলের মারপ্যাঁচে প্রথমেই সবজির দাম আকাশছোঁয়া করছেন স্থানীয় ব্যাপারী ও রাজধানীর ফড়িয়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। মূলত তাদের কারসাজিতে মাঠ পর্যায়ে কৃষক যে দামে পণ্য বিক্রি করছেন, ঢাকায় ক্রেতা পাঁচগুণ বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম কমায় পরিবহণ ভাড়াও কমেছে। সঙ্গে রাস্তায় নামে-বেনামে কমেছে চাঁদাবাজি। নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উৎপাত। তারপরও পণ্যের দাম কমেনি। বরং প্রতিদিনই বাড়ছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উৎপাদনকারী থেকে পণ্য ভোক্তা পর্যায়ে আসতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে-স্থানীয় ব্যবসায়ী, ব্যাপারী, ফড়িয়া, পাইকারি ব্যবসায়ী, খুচরা বাজার ইত্যাদি। প্রতিটি ধাপেই মূল্য বাড়ছে। সবকিছু যোগ করে নির্ধারণ হচ্ছে সবজির দাম। এর সঙ্গে লাভ যোগ করে খুচরা বিক্রেতা ভোক্তার হাতে পণ্য তুলে দিচ্ছেন। তবে ভোক্তা যে দামে কিনছেন তার সঙ্গে কৃষকের বিক্রি দামের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা গেছে। বাস্তবে দুই প্রান্তের (ঢাকা ও তৃণমূল পর্যায়) সঙ্গে মিলিয়ে দেখা গেছে পণ্য উৎপাদনের পর বিক্রি করে ঠকছেন কৃষক এবং ঢাকায় খুচরা পর্যায়ে চড়া দামে কিনতে গিয়ে ঠকছেন ভোক্ত। আর বাকি সবাই লাভবান হচ্ছেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও মানিকগঞ্জের স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতিদিনই কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে আসেন। রোববার এসব স্থানের কৃষকের কাছ থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি বরবটি ৩০-৩৫ টাকা, বেগুন ২৮-৩০ টাকা, করলা ৩০-৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, প্রতিপিস লাউ ২০-২৫ টাকা, প্রতিকেজি পটোল ২৫-৩০ টাকা, পেঁপে ১৫-১৮ টাকা, ঝিঙ্গা ৩৫-৩৮ টাকা ও ঢেঁড়স ৪০-৪৫ টাকায় কিনে নেয়। ঢাকার কাওরান বাজারের এই স্থানীয় ব্যবসায়ীর ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের কাছে সবজি বিক্রি করে। সেখানে প্রতিকেজি বরবটি ৫৫-৬০ টাকা, বেগুন ৪৫ টাকা, করলা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৪৫ টাকা, প্রতিপিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, প্রতিকেজি পটোল ৪২ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা ও ঢেঁড়স ৬০ টাকা বিক্রি করে। পরে এই ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা আবার পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিকেজি বরবটি ৮৫-৯০ টাকা, বেগুন ৭৫-৮০ টাকা, করলা ৬০-৬৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০-৫৫ টাকা, প্রতিপিস লাউ ৭০-৭৫ টাকা, প্রতিকেজি পটোল ৬০ টাকা, পেঁপে ৩৮-৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬৫-৭০ টাকা ও ঢেঁড়স ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি করে। এভাবেই দুই হাত বদলেই আকাশছোঁয়া হয়েছে সবজির দাম।

এখানেই শেষ নয়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা আবার এই সবজি কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা এমনকি ৩০ টাকা লাভে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে। খুচরা বিক্রেতারা প্রতিকেজি বরবটি ১২০-১৩০ টাকা, বেগুন সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা, করলা ৮০-৯০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৭৫ টাকা, প্রতিপিস লাউ ১০০-১১০ টাকা, প্রতিকেজি পটোল ৮৫-৯০ টাকা, পেঁপে ৫০-৭০ টাকা, ঝিঙ্গা ৯০ টাকা ও ঢেঁড়স ৮০-৯০ টাকায় ভোক্তাসাধারণের কাছে বিক্রি করে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com