আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে আবুল হোসেন (৩৩) নামে এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ ৪৩২ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে আল আমিন (২২) নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাভার মডেল থানায় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবসহ ২৫৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ আল আমিনের মা জেসমিন বেগম বাদী হয়ে সোমবার (৭ অক্টোবর) মামলাটি দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিঞা। তিনি জানান, মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা ও হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
৫ আগস্ট বিজয় মিছিল নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে থানা অভিমুখে যাওয়ার পথে মুক্তির মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আল আমিন। হাত ও পায়ে গুলিবিদ্ধ আলামিনকে ভর্তি করা হয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
রাজিব ছাড়াও মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফ হোসেন চৌধুরী মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক ফখরুল আলম সমর, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, ঢাকা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ওরফে জি এস মিজান, সাভার পৌরসভার কাউন্সিলর রমজান আলী, সাভার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, সভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবির (৩৫), সহসভাপতি টিপু সুলতান।
একই দিনে সাভারে সাবেক এমপি সাইফুলসহ ৪৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে আবুল হোসেন (৩৩) নামে এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ ৪৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আশুলিয়া থানায় এ মামলাটি করেন নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার।
নিহত আবুল হোসেন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার ফুলঘর গ্রামের মনি মিয়ার ছেলে। তিনি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক। তিনি জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা হাঙ্গামা, মারধর ও গুলি করে গুরুতর জখমসহ হত্যা ও হত্যাকাণ্ডে হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন বিজয় মিছিল নিয়ে থানার দিকে অগ্রসর হলে বাইপাইল মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবুল হোসেন। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। পরে তাকে আশুলিয়ার আমতলা বুড়ি বাজারে দাফন করা হয়।
লাকি আক্তার জানান, প্রথমে মামলাটি পুলিশ নেয়নি। পরে তিনি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আশুলিয়ার আমলি আদালতে মামলা করলে আদালতের নির্দেশে পুলিশ সিআর মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে।