সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ অপরাহ্ন

বিদেশি পর্যবেক্ষক দিয়ে ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়ন

  • সময়: শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪, ৯.২৮ এএম
  • ২৭ জন

বিগত সরকারের সময় বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীর সহায়তা চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ এ সহায়তা চেয়েছে। আজ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে বৈঠক করবে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। এ বৈঠকেও পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ ও সংস্থাগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অংশ নেবেন। বৃহস্পতিবার রাতে একাধিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, নভেম্বর থেকেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দিয়ে ব্যাংকগুলোর সম্পদ মূল্যায়নের কাজ শুরু হবে। ২২ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর বার্ষিক সভা। সভায় বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছে। তারা ওই বৈঠকের পাশাপাশি সাইড লাইনে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করছে। এগুলোয় ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করতে যে রোডম্যাপ তৈরি করেছে, তা তুলে ধরা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, পাচার করা টাকা দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের এখন জরুরি প্রয়োজন কারিগরি ও আইনগত সহায়তা। এজন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে কোনো দেশে পাচার হওয়া টাকা কীভাবে ফেরানোর আবেদন করতে হবে, কাদের কাছে করতে হবে, এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কারা-এসব তথ্য জানতে ইতোমধ্যে বিএফআইইউ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পেলে দ্রুত পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এজন্যই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সহায়তা চাচ্ছে। আজকের বৈঠকেও বাংলাদেশ এ বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চাইবে। বৈঠকে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। এ সময় প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তারা জানান, নতুন বাংলাদেশ গড়তে তারা বিভিন্ন খাতে সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। সংস্কার শেষ হলেই নির্বাচনের বিষয়ে কাজ শুরু হবে। তারা প্রবাসীদের কাছে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে দেশ দ্রুত সংকট কাটিয়ে ওঠতে পারবে।

প্রবাসীদের এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, রাতারাতি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না। একটু সময় লাগবে।

বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এক বৈঠকে অংশ নিয়ে বলেন, নভেম্বর থেকেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দিয়ে ব্যাংকগুলোর সম্পদ মূল্যায়নের কাজ শুরু হবে। দেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনাসহ ভগ্নদশায় থাকা আর্থিক খাতের শুদ্ধতায় আনা পরিবর্তনগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্পদ মূল্যায়নের কাজ শুরু করতে রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে। গত সরকারের আমলে কোন ব্যাংক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দিয়ে যাচাই-বাছাই করে নিরূপণ করা হবে। তখন জানা যাবে কোন ব্যাংক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ভিত্তিতে ব্যাংক খাতের প্রকৃত অবস্থা জানার পাশাপাশি সংস্কারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাত সংস্কারসহ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বিশ্বব্যাংকের কাছে নীতিসহায়তা চাওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ সহায়তা দরকার। এর আগে বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোরে ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সভায় আইএমএফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা দেবে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জিওরগিভা এ কথা বলেন।

আইএমএফ-এর এমডি শ্রীলংকার উদাহরণ দিয়ে বলেন, দেশটিতে সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সাফল্য তাদের বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রতিবেশী সদস্য দেশগুলোয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে শ্রীলংকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল এবং কম আয়ের দেশে সংখ্যার বিচারে শুধু মূল্যস্ফীতি কমাটাই সব নয়, এর সঙ্গে অন্যান্য সূচকেও উন্নয়ন করতে হবে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com