রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২০ অপরাহ্ন

স্বামীকে ৯ টুকরো করে সেফটিক ট্যাংকে ফেলেন স্ত্রী

  • সময়: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ১২.৫৫ পিএম
  • ৫৩ জন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে হত্যা করে নয় টুকরা করে ইট দিয়ে পলিথিনে পেঁচিয়ে পাশের বাড়ির সেফটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে স্ত্রী।

ঘটনার চারদিন পর গতকাল (মঙ্গলবার) তার লাশ উদ্ধার করেছে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশ। এই ঘটনায় ঘাতক স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে লাকীকে আটক করেছে পুলিশ।

জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল অরুন মিয়া। নিহতের বাবার নাম সুরুজ ব্যাপারী।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার অরুণ মিয়া প্রথম স্ত্রী মৃত্যুর পর ৩৫ বছর আগে দ্বিতীয় বিবাহ করেন একই গ্রামে মোমেনা বেগমকে। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চরম আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে অরুন মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুবেলের কাছে ঢাকায় চলে যান।

এদিকে অরুন মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান দুবাইয়ে কর্মরত অবস্থায় মারা যান। পরে দেশে এনে তার লাশ দাফন করা হয়। তার বিদেশ যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ করেন। পরবর্তীতে অরুন মিয়া তার জমি বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করেন।

গত শুক্রবার বিকেল থেকে অরুণ মিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ বিষয়ে গত সোমবার তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান লুৎফুর রহমান রুবেল বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অরুণ মিয়ার পার্শ্ববর্তী বাড়ির সৌদি প্রবাসী মনির মিয়ার সেফটি ট্যাংকির কাছে দুর্গন্ধ পায় এলাকাবাসী এসময় তারা টর্চ লাইট দিয়ে ভিতরে পলিথিনে মোড়ানো কিছু দেখতে পায় । এরপর পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে সেফটি ট্যাংকের মধ্যে থেকে নয় টুকরো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অংশ উদ্ধার করে এটা অরুণ মিয়ার লাশ বলে তার ছেলে শনাক্ত করে।

প্রতিবেশী কুদ্দুস মিয়া বলেন, কত শুক্রবার আমরা সঙ্গে অরুণ মিয়া নামাজ পড়েছে তারপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল তার বউ আমাদের বলেছে শুক্রবার সকালে সে ঢাকা গিয়েছে এ বিষয়টি আমাদের সন্দেহ হয়।

পরবর্তীতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমরা মনিরের বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কে দুর্গন্ধ পাই পরে টর্চ লাইট দিয়ে দেখি পলিথিনে মোড়ানো কিছু জিনিস। আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ পলিথিন প্যাঁচানো মধ্যে লাশ দেখতে পান। পরে লাশটি শনাক্ত করে তার ছেলে।

অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর সন্তান লুৎফুর রহমান রুবেল বলেন, আমার বাবা সাত বছর আমার কাছে ছিল কিছুদিন আগে আমার প্রতিবেশী চাচারা বিষয়টি মিটমাট করে দেয় এবং আমার ছোট মায়ের সঙ্গে আমার বাবা থাকা শুরু করে। এরমধ্যে আমার ভাই সৌদি আরবে মারা যায়। তার বিদেশ যাওয়ার সময় অনেক টাকা দেনা ছিল পরবর্তীতে আমার বাবা জমি বিক্রি করে এই দেনা পরিশোধ করে। গত কয়দিন যাবত আমি ফোনে আমার বাবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি কিন্তু যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। পরে গত রোববার আমি বাড়িতে আসি এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক সুজন চন্দ্র পাল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি পারিবারিক কলহের জেরে অরুন মিয়াকে মারা হয়েছে। এই ঘটনায় মোমেনা বেগম তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে লাকিকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved by BUD News 24-2025
Developed BY www.budnews24.com