ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠে সারা দেশে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাদ যাননি শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও।
শনিবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে তোফাজ্জল হত্যার বিচার চেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার অভিনেত্রী তমা মির্জা।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘নিহত তোফাজ্জল কোন দল, কোন ধর্ম, কোন বর্ণ, কেমন ব্যক্তি ছিল, মানসিকভাবে সুস্থ ছিল কি ছিল না জানতে চাই না। ওনারাই বা (খুনিরা) কেন এমন করল? কীভাবে করল? কোন পরিস্থিতিতে করল, শুনতে চাই না। আমি শুধু জানতে চাই, শুনতে চাই- তোফাজ্জল ন্যায়বিচার কি পেল?’ ব্রাকেটে এও উল্লেখ করেন, ‘এবং সেটি অনতিবিলম্বে’।
এর আগে তমা মির্জা মারপিটের আঘাতে বিপর্যস্ত তোফাজ্জলের নিথর দেহ পরে থাকার একটি প্রতীকী ছবি শেয়ার করেন। সেখানে তমা লেখেন, ‘আমি বিচার চাই’।
শুধু তমা মির্জাই নন। তোফাজ্জল হত্যার নিন্দা প্রকাশ ও মর্মান্তিক এ হত্যার বিচার চেয়ে এর আগে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, নির্মাতা আশফাক নিপুন, নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী, চিত্রনায়িকা মৌসুমি হামিদ, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ, সংগীতশিল্পী হাসান সানিসহ আরও অনেকে।
নির্মাতা আশফাক নিপুন এ ঘটনায় বেশ ব্যথিত হয়ে লেখেন, ‘আমি শুধু তাদের মায়েদের কথা ভাবি। এই যে তোফাজ্জল নামের এক মানসিকভাবে অপ্রকৃতিস্থ যুবককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলল, আমি ভাবি তোফাজ্জলের মা সেটা দেখতে পেলে কী করতেন?’
তোফাজ্জলকে হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী প্রশ্ন ছোঁড়েন, ‘গণপিটুনিকে নরমালাইজ করা হচ্ছে কেন?’
ক্ষোভ প্রকাশ করে মৌসুমি হামিদ তার ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি তোফাজ্জল হত্যার বিচার চাই। এই হাতের ওপর লাঠি রেখে যারা ওর হাত পাড়াচ্ছে? পা দুইটা থেঁতলায় ফেলছে মারতে মারতে? এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।’
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে একদল শিক্ষার্থী তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে কয়েক দফায় নির্যাতন করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নে। কয়েক বছর ধরে তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।
তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীদের ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার, তাদের সিট বাতিল, হল প্রভোস্টকে অব্যাহতিসহ বেশ কিছু জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।