স্নানঘাটবাসীর জন্য গত সোমবার দিনটি ছিল বিশেষভাবে স্মরণীয়। এ দিন বীরবেশে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন দেওয়ান হামজা চৌধুরী। ফুলেল শুভেচ্ছা আর মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন ইংলিশ লিগে খেলা এই ফুটবলার। তাকে ঘিরে এখন স্নানঘাটে আনন্দোৎসব চলছে। হামজা আসবেন বলে গতকাল সকাল থেকেই স্নানঘাটে ফুটবলপ্রেমীরা ভিড় করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনস্রোত বাড়তে থাকে। ঢাকা থেকে সংবাদকর্মীরা আসেন হামজার বাড়িতে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পুঁটিজুরী বাজার থেকে তিন কিলোমিটার ভেতরে রাস্তার স্থানে স্থানে হামজার ছবি দিয়ে সুসজ্জিত গেট তৈরি করা হয়। তার বাড়িও সাজে নবসাজে। সব মিলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। তার জন্য ছিল বিশেষ নিরাপত্তাও ।
গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ৩টায় হামজাকে বহনকারী গাড়ি বাড়িতে পৌঁছায়। স্নানঘাট বাজারে পৌঁছা মাত্রই উৎসুক জনতা ‘হামজা হামজা’ করে স্লোগান দিতে থাকে।
এদিকে ভক্তদের হইহুল্লুড় শুনে নিরাপত্তাজনিত কারণে গাড়ি থেকে নামেননি হামজা। তাই গাড়ির ওপরে ফুল ছিটিয়ে তাকে বরণ করা হয়। গাড়িটি বাড়ির উঠান পর্যন্ত যেতে হয়েছে। সেখানে পরিবারের লোকজন যারা বাড়িতে বাস করেন, তারা ঘরের কলাপসিবল গেটে ফিতা টানিয়ে আটকান হামজা ও তার স্ত্রীকে। কারণ, হামজার স্ত্রী শ্বশুরালয়ে প্রথম এসেছেন।
এদিকে, গ্রামবাসীর আয়োজনে বাড়ির পাশে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে তাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য। কিন্তু উৎসুক জনতার ভিড় ও হইহুল্লুড় দেখে হামজার পিতা দেওয়ান মুরশেদ আলম মাইকে ঘোষণা দেনÑ আপনারা সুশৃঙ্খলভাবে বসুন, হামজা আধঘণ্টা বিশ্রাম করে মঞ্চে আসবে। বাবার কথামতোই হামজা চৌধুরী মঞ্চে আসেন, তবে স্বাভাবিকভাবে মঞ্চে আসতে পারেননি। মানুষের ভিড় ঠেলে তাকে মঞ্চে তোলেন নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা। মঞ্চে হামজা চৌধুরী জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’। দুবার এ কথাটি বলে মঞ্চ থেকে নেমে যান। আগামী ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে অভিষেক হবে ইংলিশ লিগে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরীর। এতে নতুন ইতিহাস হবে বাংলাদেশের ফুটবলে।
হামজা চৌধুরীর পিতা গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘হামজা আসছে। বউ-বাচ্চাসহ তার সঙ্গে অন্তত ১২ জন আসছেন বাংলাদেশে। জাতীয় দলের খেলা থাকায় তার হাতে বেশি সময় নেই। তাই বাড়িতে এক রাত থাকবেন । এরপর ঢাকায় চলে যাবেন হামজা।’