সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩২ অপরাহ্ন

ইসলামী ব্যাংকেও কুনজর ছিল নজরুল ইসলাম মজুমদারের

  • সময়: বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪, ৬.৩৭ পিএম
  • ৩০ জন

ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারের। সেটাকে পুঁজি করে ব্যাংক খাতে নানা অপকর্ম করেন তিনি।

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইসলামী ব্যাংক থেকেও দুই হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছেন নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদার। বর্তমানে এসব ঋণের ২১৫ কোটি টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ। ধীরে ধীরে ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার পথে।

জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত অর্থসংগ্রহকারী ব্যাংকিং খাতের চাঁদা সংগ্রাহক হিসাবে পরিচিত নজরুল ইসলাম মজুমদার ইসলামী ব্যাংকে ২০১৭ সালের পর থেকে ঋণের অঙ্ক বাড়িয়েছেন। এর আগে গ্রাহক থাকলেও ঋণের পরিমাণ ছিল যৎসামান্য। এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি দখলে নেওয়ার পর থেকে মজুমদার প্রভাব খাটিয়ে নিজেও ঋণ নিতে শুরু করেন।

মজুমদারের ঋণ মূলত দেওয়া হয়েছে লোকাল শাখা থেকে। এই শাখায় তখন ম্যানেজার হিসেবে ইভিপি মো. ওমর ফারুক খান যোগদান করেন। মজুমদারের নাসা গ্রুপের বেশির ভাগ ঋণ তার মেয়াদকালেই দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ছয় বছরে ৩টি পদোন্নতি নিয়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) হন ওমর ফারুক খান। তবে তিনি ইসলামী ব্যাংক ছাড়েন ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ।

চলতি বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর আবার ইসলামী ব্যাংকে যোগদান করেন নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠা এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংকের লোকাল অফিসে বিএবির সদ্য বিদায়ি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা তাইপে ডেনিমসের ঋণের অঙ্ক ২৮৮ কোটি টাকা। এই ঋণের ১৪৪ কোটি টাকাই নেওয়া হয়েছে বিশেষ বিবেচনায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি ১৪৪ কোটি টাকার ঋণ নিতে পারত। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের প্রভাব খাটিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদার বিশেষ বিবেচনায় আরও ১৪৪ কোটি টাকা ঋণ নেন। বর্তমানে এসব ঋণের ৫১ কোটি টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।

শুধু তাই নয়, একই অবস্থা নাসা স্পিনিং লিমিটেডের ১৬৩ কোটি টাকার ঋণেও। প্রতিষ্ঠানটিকে বিশেষ বিবেচনায় দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। বর্তমানে ওই ঋণের ২৩ কোটি টাকাই মেয়াদোত্তীর্ণ।

এছাড়া নাসা স্পিনার্স লিমিডেটের ঋণের অঙ্ক ৬০ কোটি টাকা। এই প্রতিষ্ঠানকেও ৭ কোটি টাকার ঋণ বিশেষ বিবেচনায় দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের অঙ্ক ১৮ কোটি টাকা।

প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা সুপার গার্মেন্টসের বর্তমান ঋণের অঙ্ক ২৩৪ কোটি টাকা। এসব ঋণের সাড়ে ৯ কোটি টাকা বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে বিশেষ বিবেচনায় দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি টাকার ঋণ। আর নাসা সুপার ওয়াশ লিমিটেডের ঋণের অঙ্ক ২০৯ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের অঙ্ক ১৩ কোটি টাকা।

এছাড়া নাসা অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ আরও ১২ প্রতিষ্ঠানকে ইসলামী ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। এই ঋণের মধ্যে ৬৬৮ কোটি টাকাই নেওয়া হয়েছে বিশেষ বিবেচনায়। বর্তমানে এসব ঋণের প্রায় শত কোটি টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com