সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

  • সময়: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪.৫৭ পিএম
  • ৩১ জন

গাজীপুরের শ্রীপুরে দুই বছরের বকেয়া বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট পরিশোধের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা থেকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়নপুর এলাকার আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ শুরু করে।

এসময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুপাশে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে বিভিন্ন পরিবহনের হাজারো যাত্রী। পরে ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিক আলম মিয়া বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে না। আমাদের দুই বছরের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বকেয়া রেখেছে। দেই-দিচ্ছে করে শুধু সময় পার করছে। আমরা শ্রমিকেরা শুধু আশ্বাসের বুলি শুনছি। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে আমাদের কাছে একটা টাকার যে কত মূল্য, তা ওপরের তলার লোকজন বুঝবে না।’

একই কারখানার শ্রমিক তারেক মিয়া বলেন, ‘দুই বছর আগে দুই থেকে তিন মাস পরপর বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হতো। কিন্তু গত দুই বছরের ইনক্রিমেন্ট বকেয়া থাকলেও তা পরিশোধ করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। এসব দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে কথা বলতে গেলে আমাদের অনেক বকাঝকা খেতে হয়। অনেকে আবার চাকরিচ্যুত হয়।’

কারখানার শ্রমিক কাদের বলেন, ‘আরএকে সিরামিক কারখানা ইনক্রিমেন্ট বাস্তবায়ন না করে পূর্বের গেজেট আকারে বেতন পরিশোধ করছে। এতে করে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। যে পরিমাণ বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্ত্রী-সন্তানের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ন্যায্য পাওনা বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বাস্তবায়ন হলে আর তা যথা সময়ে পরিশোধ করলে আমাদের মতো শ্রমিকদের একটু হলেও উপকার হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছিল গত মাসের বেতনের সঙ্গে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। কিন্তু গত মাসে দেয়নি। এ মাসেও দেবে না বলে জানিয়েছে।’

কারখানার শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ কারখানায় এডমিন সেকশনে কয়েকজন ভারতীয় লোক আছে যারা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। আমরা ওদের পরিহার চাই।’

এ বিষয়ে আরএকে সিরামিক কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট প্রদানের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। একটা সিদ্ধান্ত হচ্ছে এ বিষয়ে। কিন্তু কারখানার শ্রমিকদের দাবি, আজকের মধ্যে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।’

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজনে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম সোহেল রানার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর) আজমির হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন,‘মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করে। সেখানে শিল্প পুলিশ ও আমাদের পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারও ছিল। বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শ্রমিকেরা। বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশ।

গাজীপুরের শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আজিজুল হক বলেন, ‘ শ্রমিক আন্দোলনের ফলে সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে ১১টার পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তাদের দাবী পূরণে কারখানা কর্তৃপক্ষ একমত হওয়ায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে আসে।’

সূত্রঃ যাযাদি

আপনার সামাজিক মাধ্যমে খবরগুলো শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024
Developed BY www.budnews24.com